কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ হাওরে অকালবন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর এবার উত্তরাঞ্চলের জলাভূমি চলনবিলে অকালবন্যা দেখা দিয়েছে। এতে উঠতি বোরো ধানের খেত তলিয়ে যাচ্ছে। কাঁচা-আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা। আর এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চলনবিলের চাষিদের জরুরি ভিত্তিতে খেতের পাকা ধান ঘরে তোলার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করছে নাটোরের সিংড়া উপজেলা প্রশাসন। ফসল রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে শ্রমিক-সংকটের কারণে প্রয়োজনমতো ধান কাটতে না পেরে দুশ্চিন্তায় সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।
কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলনবিলে সাধারণত জ্যেষ্ঠ মাসের শেষ দিকে বন্যার পানি ঢোকে। কৃষক তাঁদের ফসল ঘরে ওঠাতে পারেন। কিন্তু এবার উত্তরের ঢলগড়া পানি আত্রাই নদ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় এর শাখা নদী হয়ে আগাম পানি ঢুকে পড়েছে। এ কারণে চলনবিলের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত মরা-আত্রাই, বেশানী, কাটা নদীর ১৭টি নালা পানিতে টইটম্বুর অবস্থায় হয়েছে। এসব নালা পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় নালা উপচে খেতে ঢুকে পড়ায় নালা তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার ধানখেত তলিয়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত চলনবিল এলাকার নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের বিলশার বেশানী নদীর উত্তর মাঠের বিলটেবিগাড়ি, দিয়ারভিটা, ছারুখালি, বোগানালীছাড়া, সিংড়া উপজেলার কাউয়াটিকিরি, সরিষাবাড়ি, ডাহিয়া, বেড়াবাড়ি, ইটালি, ভেটুয়া ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নালা তীরবর্তী এলাকার উঠতি পাকা ধানখেতে পানি ঢুকে পড়েছে।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে তাঁর উপজেলায় ১০০ হেক্টর বোরো খেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে আত্রাই নদের পানি প্রবেশ বন্ধে উপজেলার সিঙ্গুরে একটি বাঁধ দেওয়ায় চলনবিলের ফসল রক্ষা সম্ভব হয়েছে। তারপরও মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা (বিএস) কাজ করছেন। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দ্রুত পানি নেমে গেলে কৃষিতে তেমন ক্ষতি হবে না। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, তাঁর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমির ধান নিমজ্জিত হয়েছে। গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে।
সুত্রঃ প্রথম আলো/ কৃপ্র/এম ইসলাম