কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নওগাঁ জেলার মান্দার উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের প্রসাদপর গ্রামের বাঘের বিলসহ আশেপাশের বিলে নেক ব্লাস্ট রোগে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জানা গেছে গনেশপুর, মৈনম, কাশোপাড়া, কশব ইউনিয়নের বিভিন্ন বিল ও মাঠের ক্ষেতগুলিতেও একই রোগ দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কৃষি বিভাগ মনিটরিং করে নেক ব্লাস্ট রোগের প্রতিকারের জন্য ১৬ মিলি এমিটারটফ বা ১৬ গ্রাম ট্রুপার বা ১৬ গ্রাম জিল বা ১০ গ্রাম নাভিটো বা ২ গ্রাম অটোস্টিন বা নোইন, ৮০ গ্রাম পটাশ মিশিয়ে প্রতি ১৬ লিটার পানিতে মিশিয়ে ২বার করে ৪-৫ দিন প্রযোগ করতে পরামর্শ দিয়েছে। তারপরও এ রোগ কোনভাবেই আর ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।
প্রসাদপুর গ্রামের কৃষক মমতাজ হোসেন, মোবারক হেসেন ফাটু, মকবুল হোসেন ফকির বাদল, আবদুল মতিন, আবুল হোসেন জানান, গত বছর থেকে নেক ব্লাস্ট রোগে এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এবছর আক্রান্তের হার অনেক বেশি। উপজেলা কৃষি অফিস পরামর্শ দিলেও কীটনাশক প্রয়োগ করে কোনো লাভ হয়নি বলে বেশিরভাগ কৃষকের অভিযোগ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারে এ উপজেলায় ২২হাজার ৬৫০হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ১৫০হেক্টর বেশি জমিতে। বোরো ক্ষেতে শীষ বের হবার আগে ও পরে হঠাৎ করে বাইকোলারিস অরাইজি ছত্রাক সৃষ্ট নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ধান সাদা ও চিটা হয়ে যাচ্ছে। ফসল ঘরে তোলার আগ মুহূর্তে এ রোগের প্রকোপে দিশেহারা কৃষক কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন ফল পাচ্ছেন না।
তাছাড়া রোগাক্রান্ত ফসলের গাছের জীবাণু পোকামাকড় ও বাতাসের মাধ্যমে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ে আক্রান্ত করছে। এতে ধানের শীষের গোড়া, পাতা, শাখা-প্রশাখা ও গিট দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। ফলে খাদ্য ও পানি না পাওয়ার কারণে পুষ্ঠ হওয়ার আগ মুহূর্তে চিটা হয়ে গেছে ধানের শীষগুলো। পরে আক্রান্ত ধান গাছগুলো প্রথমে সাদা হয়ে পরে কালো বর্ণ ধারণ করে শীষ মারা যাচ্ছে। ধানের এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে উপজেলা কৃষি অফিস প্রানান্তরকর চেষ্ঠা চালালেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। গত বছরের তুলনায় এবার এ রোগের ব্যাপকতা কৃষককে লোকসানের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রামানিক বলেন, কৃষকের অজ্ঞতার কারণে বোরো ক্ষেতে অধিক হারে নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করা, রোগাক্রান্ত বীজের চাষ, দিনে প্রচন্ড গরম ও রাতে ঠান্ডা আবহওয়ায় এ রোগের বিস্তারের প্রধান কারণ বলে তিনি মনে করেন। এতে এবার কিছু ধান উৎপাদন কম হতে পারে, তবে হতাশগ্রস্থ হবার কোন কারণ নেই।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/এম ইসলাম