কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ গোপালগঞ্জের চান্দার বিলে এলাকার ৪৪ গ্রামের হাজারো কৃষকদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আধাপাকা ধান কেটে নিচ্ছেন কেউ কেউ। তবে অনেক কৃষকই জমির ধান গঁজিয়ে যাওয়ায় তা আর কাঁটতে যাচ্ছেন না। কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানিতে ভাসছে। কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ধান এখন পানিতেই পঁচে যাচ্ছে। টাকার অংকে অন্ততঃ ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কৃকদের। গোপালগঞ্জের বৃহত্তম বিল চান্দাসহ অন্যান্য বিলে অন্ততঃ ৬শ’ হেক্টর জমির বোরো ধান জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।
জোয়ারের পানি থেকে তাদের কষ্টের ফসল রক্ষা করতে বিলের চারিপাশে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ, আর প্রয়োজনীয় স্লুইস গেট নির্মাণের দাবি এলাকার কৃষকদের। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী গোপালগঞ্জে এবছর ৭৩ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। ধানের উৎপাদনও ভাল লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। বেশীর ভাগ জমির ধানেই আধাপাকা অবস্থায় ছিল। মনের সুখে পাকা ধান কাটবেন কৃষকেরা।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিল এলাকায় বোরো ধান কাটতে ধানকাটা শ্রমিকেরাও এসেছিলেন। কিন্তু, বিধি বাম, কৃষকের মুখে হাসি ফোঁটার আগেই তাদের স্বপ্নের ধান জোয়ারের পানি, আর সেই সাথে টানা ৪ দিনের বর্ষণে তলিয়ে যায়। জেলার কৃষকদের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। হাজার হাজার কৃষক তাদের স্বপ্ন ভঙ্গের দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারছেন না।
জেলার বিভিন্ন বিলাঞ্চলের কৃষকদের মতে ৬শ’ থেকে এক হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান এবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানালেও কৃষি বিভাগের মতে ২৯২ হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
মুকসুদপুর উপজেলার পাটকেলবাড়ি গ্রামের সুরেশ বিশ্বাস (৫৫), মনোরঞ্জন বিশ্বাস (৫৮) পবিত্র মন্ডল (৪০), মহাটালী গ্রামের সিতাংশু মন্ডল জানান, আমাদের স্বপ্নের সোনালী ধান এখন পানিতেই তলিয়ে গেছে। আধাপাকা ধান কেটে নিচ্ছেন কেউ কেউ। জোয়ারের পানি থেকে আমাদের কষ্টের ফসল রক্ষা করতে বিলের চারিপাশে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ, আর প্রয়োজনীয় স্লুুইস গেট নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
উজানী ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি বোস জানান বিলচান্দার প্রতি বছরের মত এবারও বাম্পার ধানের ফলন হয়েছে। চান্দার বিলে জোয়ারের পানি ঢোকে বোসের খাল, সীমা খালে এবং সিংগিমারার খাল দিয়ে। এই তিনটি পয়েন্টে স্লুইস গেটের আবেদন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এর প্রয়োজনীয়তা যাচ্ইা সাপেক্ষে অর্থ বরাদ্দ দিবে বলে আশ্বস্থ করেছে। এছাড়া পানি আটকানের জন্য কাশালিয়ার বেদগ্রাম, হয়ে বরমপাল্টা, এবং পাটকেলবাড়ী সীমাখালির শেষ মাথা পর্যন্ত একটি বেড়িবাঁধও নির্মাণ করার প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান জানিয়েছেন হঠাৎ বৃষ্টি এবং উজানের ঢলে বিলচান্দার বেশকিছু জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এলাকার সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং কৃষি বিভাগের সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করছি। অতিদ্রুত ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি সহযোগিতা পাবে।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম