কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই হাওর অঞ্চলে সংঘটিত সাম্প্রতিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন স্থানীয় পর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তবে দুর্গত জনসাধারণ মনে করেন, ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তাদের কমপক্ষে এক বছর সময় লাগবে। গত এক মাসের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে হাওরঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। তাদের প্রধান শস্য বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি মাছসহ জলজ সম্পদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, যদিও সরকার শুধুমাত্র সুনামগঞ্জেই দেড় লাখেরও বেশি বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য একশ’ দিনের সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তথাপি তারা আস্থাশীল যে আগামী ৩ মাসের মধ্যে দুর্গত মানুষ আকস্মিক বন্যায় সৃষ্ট পরিস্থিতি তারা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যতদূর সম্ভব আমরা সঠিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি এবং বন্য দুর্গতদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু গত মাসের আকস্মিক বন্যার পর তৃতীয় পর্যায়ে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে এবং বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে মাছ মারা যাচ্ছে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, জনগণ তাদের দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। ত্রাণ কর্মকর্তার মত জেলা প্রাণিসম্পদ, কৃষি ও মৎস্য কর্মকর্তারাও এরকমটাই মনে করেন। তারা বলেন, হাওর অঞ্চলের সমস্যাকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, ঠিক সেরকমটা নয়। তাদের মতে, সরকারের এ সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা রয়েছে এবং কিছু এনজিও এবং অন্যদের দাবি অনুসারে হাওর অঞ্চলকে ‘দুর্গত এলাকা’ ঘোষণা করার কোন প্রয়োজন নেই।
তারা জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে সরকার বন্যাদুর্গতদের জন্য ১শ’ দিনের একটি বিশেষ সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর আওতায় প্রত্যেক পরিবার ১শ’ কেজি করে চাল এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের জন্য ১ হাজার ৫শ’ টাকা করে দেয়া হবে। এছাড়াও নিয়মিত ‘ভিজিডি’ এবং ‘জিআর’ কর্মসূচির সুবিধা পৌঁছে দেয়া হবে। যদি প্রয়োজন হয় এ বিশেষ কর্মসূচি আরো কয়েক মাস অব্যাহত থাকবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা জানান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহায়তার পাশাপাশি বোরো ধানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে ‘আমন ধান’ চাষের জন্য হাওরের জনগণকে অনুপ্রাণিত করছে কৃষি বিভাগ। যদিও বাৎসরিক হিসেবে তারা একটি মাত্র শস্য ‘বোরো’র উপর নির্ভরশীল কিন্তু হাওর এলাকার জনগণের জন্য ‘আমন’ একটি সহায়ক শস্য হতে পারে।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম