এসএম মুকুল: বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশই অন্যতম দেশ যার ভূ-ভাগের মধ্যে সিংহভাগই চাষাবাদের উপযুক্ত। তাই হয়তো ছাদ কৃষির প্রতি নগরবাসীর আগ্রহ কম ছিল। বিভিন্ন পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশের শহরগুলোর ১০ লাখেরও বেশি বাড়ির ছাদের আয়তন প্রায় একটি জেলার আয়তনের সমান। এক হিসাবে আড়াই কাঠার একটি বাড়ির ছাদে বাগান করে নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে বছরে ৫০ হাজার টাকা বাড়তি আয় করা সম্ভব।
ছাদগুলো চাষাবাদের আওতায় আনলে বছরে একটা ছাদ থেকে নূ্যনতম ১০ হাজার টাকার সবজি পাওয়া সম্ভব। নগরীর প্রতিটি বাড়ির ছাদ আঙিনা ও বারান্দা কৃষি উৎপাদনের আওতায় আনা হলে তা থেকে বিপুল পরিমাণ শাক-সবিজ, ফল-ফুল, ঔষধি গাছ উৎপাদনসহ ছোট, মাঝারি খামারও গড়ে শত কোটি টাকার আয়ের ব্যবস্থা হতে পারে। যার ফলে নগরবাসীর বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং বাড়তি আয়ের পাশাপাশি ও নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। শখের বশে অবসরকে কাজে লাগাতেও অনেকে ছাদে ফুলের বাগান, সবজি ও ফলের বাগান করছেন। ফলে বিষমুক্ত টাটকা শাক-সবজি, ফলমূল উৎপাদন
পরিবারের চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করছে। অনেকে বহুমাত্রিক ছাদ কৃষির মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সবজি ও ফল বিক্রি করে অর্থ আয় করছেন। তাই ছাদ কৃষির ফলে বহুমাত্রিক সুবিধা ও সাফল্যের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ছাদ কৃষিতে একদিকে যেমন বাগান পরিচর্যার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা আসবে, তেমনি ছাদে সবুজ আভরণে পরিবেশের মলিনতা কাটিয়ে সবুজ সতেজতা আনবে।
লেখক : কৃষি বিশ্লেষক ও উন্নয়ন গবেষক