কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সমন্বিত কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কৃষকের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। প্রকল্পের নানাবিধ কর্মকাণ্ডের ফলে বসতবাড়িতে মিশ্র ফলবাগান সৃষ্টির মাধ্যমে পুষ্টি চাহিদা পূরণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে।এ প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে কৃষক দল গঠন, ফসল চাষে পরামর্শ প্রদান, শস্য বহুমুখীকরণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, পুষ্টিভিত্তিক ফসলের প্রদর্শনী, কৃষি ব্যবস্থাপনায় সচেতনতা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন ধরণের সহায়তা প্রদান কৃষকদের মধ্যে নবজাগরণের সৃষ্টি করেছে।
প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে শরিয়তপুর পৌরসভাসহ ১২টি ইউনিয়নে মোট ১৩টি কৃষক গ্রুপ গঠিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রকল্পের মাধ্যমে নানাবিধ পুষ্টিভিত্তিক ফসলের প্রদর্শনী আয়োজনের পাশাপাশি বিদ্যালয় ও বসতবাড়িতে মিশ্র ফল বাগান ও শাকসবজির প্রদর্শনীও হচ্ছে। ফসল চাষ, যত্ন ও মাড়াইয়ের জন্য রয়েছে বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্র। ফসল যাতে রোগবালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পায় সেজন্য প্রকল্প থেকে গ্রুপের মাঝে সরবরাহ করা হয় ফুট পাম্প, হ্যান্ড স্প্রেয়ারের মতো আধুনিক যন্ত্র। প্রকল্প থেকে সরবরাহকৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে আরো আছে পাওয়ার টিলার, এলএলপি এবং পাওয়ার থ্রেসার। কৃষকরা জানান, এসব যন্ত্র প্রকল্প থেকে গ্রুপের মাঝে সরবরাহ করা হয় নামমাত্র জামানত এবং ভাড়ার বিনিময়ে।
বড়কান্দি ইউনিয়নের কৃষক গ্রুপের আবু হোসেন বলেন, আমি প্রতিবছর ৪-৫ বিঘা জমিতে গমসহ নানারকম সবজির আবাদ করি। জমিতে পানি দেয়ার জন্য অনেক টাকা খরচ করার পরও সময়মতো পানি দিতে না পারায় ফলন অনেক কম হতো, এখন গ্রুপের মেম্বার হয়ে এই সুবিধাগুলো পাচ্ছি। তাই আমার ফলন আগের চেয়ে ১৫-২০ ভাগ বেড়ে গেছে।
সেনেরচর ইউনিয়নের চাষি আবেদ আলী কালোজিরা চাষ করে সফল হয়েছেন। তিনি বলেন, বিগত ২ বছর পুষ্টি প্রকল্পের প্রদর্শনীর কালোজিরা চাষ করছেন এবং লাভবান হচ্ছেন বেশ। সেই সাথে তার দেখাদেখি ২০-২৫ জন নতুন করে কালোজিরা চাষ করছেন।
জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সরকারের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প অত্র উপজেলায় চলমান; কিন্তু এই প্রকল্পটি পুষ্টি, শস্যবহুমুখিকরণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, কৃষক প্রশিক্ষণ, বসতবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শাকসবজি ও ফল বাগান স্থাপনে উপজেলার কৃষি ব্যবস্থায় ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে। কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন, খাদ্যভিত্তিক পুষ্টি বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং মেধাবী প্রজন্ম বিনির্মাণে প্রকল্পটি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম