কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আমাদের দেশে অযত্ন অবহেলাতেই করমচা গাছ জন্মায় এবং ফলন এর পাকা ফল দেখতে চেরি ফলের মত।করমচা, টক জাতীয় গ্রীষ্মকালীন ফল। কাঁটায় ভরা এ গাছটি গ্রাম থেকে এখন শহরেও চাষ হয়। এর চাষ পদ্ধতিও অনেক সহজ। ফেব্রুয়ারি মাসে গাছে ফুল আসে এবং ফল ধরে এপ্রিল-মে মাসে। বর্ষায় ফল পাকে।
করমচা চাষে জমি উঁচু হলেই ভালো, তবে নিচু জমিতেও চাষ করা চলে যদি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো থাকে। করমচা খুব শক্ত ধরনের গাছ এবং দেহে আঠালো রস থাকায় রোগ ও পোকায় সহজে আক্রমণ করতে পারে না। কারো কারো বাড়ির ছাদ কিংবা বারান্দায়ও দেখা মেলে করমচার। ঝোঁপের মতো বলে গ্রামাঞ্চলে এই গাছ বাড়ির সীমানায় বেড়া হিসেবে লাগানো হয়।
করমচা বৈজ্ঞানিক নাম ক্যারিস ক্যারোন্ডাম। কনটোরটি বিভাগের অ্যাপোসাইনেসি শ্রেণীর অর্ন্তভুক্ত করমচা ফলের আদি নিবাস ক্যারোনডাস প্রজাতির ভারতবর্ষ, গ্রান্ডিফ্লোরা প্রজাতির দক্ষিণ আফ্রিকা এবং এডুইলিস প্রজাতির মিসরে। তবে আমাদের দেশে এসব প্রজাতির করমচা দীর্ঘদিন ধরে চাষ হচ্ছে। করমচা ফল হিসেবে বেশ অবহেলিত হলেও এর পুষ্টিগুণ অনেক।
পুষ্টিবিদরা জানান, প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় রয়েছে ৬২ কিলোক্যালরি এনার্জি, ১৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ০.৫ গ্রাম, ভিটামিন এ- ৪০ আইইউ, ভিটামিন সি ৩৮ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেভিন ০.১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২৬০ মিলিগ্রাম ও কপার ০.২ মিলিগ্রাম রয়েছে। করমচাতে কোনো ফ্যাট বা কোলেস্টেরল নেই। তাই ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য এ ফল খুব উপকারী। করমচা ওজন কমাতেও সাহায্য করে। ভিটামিন সি-তে ভরপুর করমচা খাবারে রুচি বাড়ায়। এছাড়াও মৌসুমী সর্দি-জ্বর নিরাময়ে সাহায্য করে। স্কার্ভি, দাঁত ও মাড়ির নানা রোগ প্রতিরোধে করমচা সাহায্য করে। করমচা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। যকৃত ও কিডনীর রোগ প্রতিরোধে করমচা সহায়তা করে। বাতরোগ ও ব্যথাজনিত জ্বর নিরাময়ে করমচা খুব উপকারি।
কৃপ্র/এম ইসলাম