কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার রাম সাগরের খাল নামে খ্যাত ৪শ’ বছরের পুরাতন সেচ খালটি দখলদারদের থাবায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। মধুমতি নদীর সঙ্গে যুক্ত ঘোপ বাঁওড় থেকে কাতলাশুরি বিল পর্যন্ত প্রায় দুই কি.মি লম্বা খালটি এখন মৃতপ্রায়। সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত খালটি স্থানীয় কৃষকদের কৃষির অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে পরিচিত। উপজেলা সদরের পাঁচটি বিলের অন্তত ১০ হাজার একর কৃষি জমিতে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন ও শুষ্ক মৌসুমে সেচের পানির যোগান দিতে খালটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সদরের কাজী সালিমা হক মহিলা কলেজ এলাকায় খালের পাড় ও ভেতর মিলে ২৫ শতাংশ জমির উপর বহুতল ভবন তৈরির জন্য আরসিসি পিলারের সাহায্যে পাঁচ ফুট দেয়াল নির্মাণ করেছেন এক ব্যবসায়ী। কলেজের এক কর্মচারী খালের মধ্যে প্রায় ১শ’ ফুট দৈর্ঘ্যের ইটের দেয়াল তুলে মাটি ভরাট করে বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা নির্মাণ করেছেন। মহিলা কলেজ এলাকায় খালের তীরে এক ব্যক্তি খালের মধ্যে থেকে সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, অতীতে প্রায় সবকটি ভূমি জরিপে সেচ খালটি ১নং খাস খতিয়ানের সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ড হয়। আগের জরিপের নকশায় খালের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২০ ফুটের বেশি। সম্প্রতি শেষ হওয়া হাল রেকর্ডে এক শ্রেণির অসাধু জরিপ কর্মকর্তার উেকাচ দিয়ে খালের জমি রেকর্ড করিয়ে নিয়েছে খাল পাড়ের জমির মালিকরা। বাওইজানি থেকে কাতলাশুরির বিল পর্যন্ত দুই কি.মি খালের দুই পাড়ের শতাধিক পয়েন্টে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করেছে। খালের জমি ভরাট করে স্থাপনা তৈরি করায় গুরুত্বপূর্ণ সেচ খালটি ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে। কয়েক জায়গায় নাব্যতা হারিয়ে খালের অস্তিত্বই সংকটের মুখে পড়েছে।
এদিকে দখলে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মজনু শাহসহ কয়েকজন দাবি করেছেন, খালের পাশে তারা তাদের কেনা জমি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্যা বলেন, খালের মধ্যের জমি কোনো ব্যক্তির হতে পারে না। বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় উত্থাপন করবো। মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, আমি এখানে সম্প্রতি যোগ দিয়েছি। খালের দুই পাড়ে অনেকেই স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। জরিপ প্রতিবেদন দেখে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/এম ইসলাম