কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইয়ে বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে প্রায় তিন হাজার বসতঘর। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে চার হাজার হেক্টর জমি ও ছয় শতাধিক পুকুর ডুবে গেছে। সড়ক পানিতে নিমজ্জিত থাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। জানা গেছে, গত সোমবার থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়। সন্ধ্যার দিকে পাহাড়ি ঢলের পানি এসে যোগ হলে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যেতে থাকে। পানিতে উপজেলার খইয়াছড়া ইউনিয়নের ফেনাপুনী, গোভনীয়া, আমবাড়িয়া গ্রামের প্রায় ৫০০ বসতঘর ডুবে গেছে। সারা উপজেলায় প্রায় তিন হাজার বসতঘর পানিতে ডুবে গেছে। ঘরের ভেতর হাঁটুপানি ও উঠানে কোমরপানি ডিঙিয়ে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।
ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ জানান, তার ইউনিয়নের মাঝগাঁও, ছোট কমলদহ, উত্তর ওয়াহেদপুর, মধ্যম ওয়াহেদপুর, দক্ষিণ ওয়াহেদপুর, সাতবাড়িয়া, জাফরাবাদ, গাছবাড়িয়া, পদুয়া এলাকায় প্রায় এক হাজার বসতঘর পানিতে তলিয়ে আছে। ছোট কমলদহ বাজারসহ গ্রামীণ সড়কগুলোও পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। পানির স্রোতে নিজামপুর রেলস্টেশন সড়ক মিয়াচাঁন সড়কসহ কয়েকটি সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছোট কমলদহ তহশিল অফিসে পানি ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের খিরমুরারী এলাকায় পানিবন্দি হয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। পানির কারণে কয়েকটি মাটির ঘর ভেঙে পড়েছে।
করেরহাট ইউপির চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন জানান, সরকারতালুক গ্রামের শতাধিক বসতঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া হিংগুলি, দুর্গাপুর, সাহেরখালী, কাটাছড়া, মিরসরাই সদর ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা পানিতে ডুবে আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মদ জানান, চলতি মৌসুমে মিরসরাইয়ে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমির ধান গাছ পানিতে ডুবে গেছে। এর আগেও বৃষ্টিতে এসব গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবার পানি দ্রুত নেমে না গেলে কৃষক ক্ষতির মুখে পড়বে।
উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হক জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে হিংগুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, খইয়াছড়া, ওয়াহেদপুর এলাকার প্রায় ছয় শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কারণে বিভিন্ন এলাকায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম