কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ দীর্ঘ ৩০ বছর পর প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে চিত্রা ও আঠারোবাকি নদীর ৮৬ কিলোমিটার নৌপথ। প্রাণ ফিরে পাচ্ছে নদী-সংলগ্ন ৩৩টি খালের ৮৯ কিলোমিটার অংশ। এতে নিরসন হচ্ছে খুলনা, বাগেরহাট ও নড়াইলের ৪৩ হাজার হেক্টর জমির জলাবদ্ধতা সংকট। স্বস্তি ফিরেছে এ তিন জেলার লাখো মানুষের মধ্যে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, প্রায় ৩০ বছর পর আঠারোবাকি ও ২০ বছর পর চিত্রা নদী পুনর্খননের এ উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার চিত্রা নদীর পুনঃখনন কাজ চলছে। আর এরই মধ্যে আঠারোবাকি নদীর সংযোগস্থল তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ইউপি কার্যালয় এলাকা থেকে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পাটনা পর্যন্ত চিত্রা নদী পুনঃখনন করা হয়েছে। আর নদীর ৩২ কিলোমিটার অংশে সৃষ্টি করা হয়েছে মিঠাপানির জলাধার।
পাউবো খুলনা ও নড়াইল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৩ জানুয়ারি আঠারোবাকি নদী পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ৫৭ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার। এর মধ্যে নড়াইলের নড়াগাতি থানার চাপাইলঘাট থেকে খুলনার রূপসা উপজেলার ইলাইপুর সেতু পর্যন্ত নদীটির ৪২ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার পুনঃখনন ও রূপসার নন্দনপুর এলাকা থেকে ইলাইপুর সেতু পর্যন্ত সাত কিলোমিটার ড্রেজিং করা হচ্ছে। স্থানভেদে ১৩ থেকে ২২ ফুট গভীরতায় এ পুনঃখনন করা হচ্ছে। আর বাকি আট কিলোমিটারে নাব্যতা থাকায় তা পুনঃখনন বা ড্রেজিং করা হচ্ছে না। এরই মধ্যে নদীটি পুনঃখনন ও ড্রেজিংয়ের ৫৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আর ৩৩টি খাল পুনর্খননের কাজ শেষ হয়েছে ৮০ ভাগ। এছাড়া জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে নদীর বিভিন্ন স্থানে সেতু নির্মাণ ও নদীর দুই পাড়ে সামাজিক বনায়নসহ রাস্তা তৈরি করা হবে।
প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও এরই মধ্যে চিত্রা ও আঠারোবাকি নদী এবং খাল পুনর্খননের সুফল পেতে শুরু করেছেন খুলনা, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলার লাখ লাখ মানুষ। বদলে গেছে নদীবর্তী এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা।
খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দীন ইসলাম বলেন, আঠারোবাকি নদী ও খাল পুনর্খননের ফলে ভূতিয়ার বিলের জলাবদ্ধতার নিরসন হচ্ছে। এতে এ অঞ্চলের চাষাবাদ বাড়বে। এরই মধ্যে কৃষকরা এর সুফল পেতে শুরু করেছেন।
তেরখাদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম অহিদুজ্জামান বলেন, চিত্রা নদী ও খাল পুনর্খননের ফলে এলাকাবাসী জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ফসলি জমির পাশাপাশি বসতবাড়িরও জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে। এ অঞ্চলের চাষাবাদ বেড়েছে।
কৃপ্র/এম/এম ইসলাম