‘হারানো গৌরব ফিরে পাবে বাংলাদেশের পাট’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। স্থানীয় বাজারেও পাটপণ্য বিক্রিও বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত নয় মাসে ৭৪ কোটি ১১ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৬৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।
আলোচ্য সময়ে পাট ও পাটপণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৮ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে পাটের সুতা ও দড়ি রপ্তানি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ খাত থেকে ৪৬ কোটি ৬১ লাখ ডালার রপ্তানি আয় হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২২ শতাংশের বেশি। কাঁচাপাট রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। আর পাটের বস্তা ও ব্যাগ রপ্তানি করে এ নয় মাসে আয় হয়েছে নয় কোটি ৮১ লাখ ডলার। এছাড়া পাটের অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে সাত কোটি ৬৭ লাখ ডলার। অবশ্য কাঁচাপাট, পাটের বস্তা ও ব্যাগ রপ্তানি আয় আগের বছরের চেয়ে কমেছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদের শুরুতে পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বন্ধ পাটকলগুলো চালুর পাশাপাশি ‘ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট প্রণয়ন, জুট ডাইভারসিফিকেশস প্রমোশন সেন্টার ( জেডিপিসি) প্রতিষ্ঠা, পাটনীতি করাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পাট হতে ভিসকস, পাটপাতার চা, কম্পোজিট জুট জিও টেক্সটাইল ইত্যাদি বিষয়ে উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেইসাথে পাটের বাজার সমপ্রসারণের কাজ করছে সরকার। ইতোমধ্যে আফ্রিকার দেশ সুদানের হারানো বাজার পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি ঘানা, কেনিয়া ও ক্যামেরুন এর বাজারে দেশের পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া চীন, দুবাই ও কাতার এর বাজারে পাটপণ্য রপ্তানি শুরু হয়েছে।
বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, পাটের সোনালী দিন ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। পাটের উত্পাদন ও বহুমুখী ব্যবহার উত্সাহিত করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জেডিপিসি পাটপণ্যের বহুমুখীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি বলেন, জেডিপিসি’র সহায়তায় ইতোমধ্যে ২৩৫ রকম দৃষ্টিনন্দন বহুমুখী পাটপণ্য তৈরী করা হয়েছে যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যবহার বহুমুখীকরণ ও উচ্চমূল্য সংযোজিত পাটপণ্য উত্পাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে চারকোল, পাটপাতার পানীয়সহ নতুন নতুন বহুমুখী পাটপণ্য উত্পাদনের ফলে পাট তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম