কৌশল : প্রতিদিন ভোর বেলায় সদ্যফোটা পুরুষ ফুল ছিঁড়ে পুংরেণু সমৃদ্ধ পুংকেশর রেখে পাপড়িগুলো ছিঁড়ে ফেলতে হয়। এরপর পুংরেণু স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে হালকাভাবে সামান্য একটু ঘষে দিতে হয়। এতে স্ত্রী ফুল নিষিক্ত হয়ে ফল ধরে। একটি পুরুষ ফুলের পুংকেশর দিয়ে ৬ থেকে ৭টি স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে পরাগায়ন করা যায়। এ জন্য একটা লাউয়ের মাচায় শতকরা ১০টা পুরুষ ফুল রাখতে হয়। এতে শতকরা ৯৫টি স্ত্রী ফুলে ফল ধরবে। এ জন্য পুরুষ ও স্ত্রী ফুল চেনা প্রয়োজন।
ফুল চেনার উপায় : পুরুষ ফুল : ফুলের বোঁটার অগ্রভাগে ফুটে। পাপড়ির গোড়ায় গর্ভাশয় থাকে না। পাপড়ির মাঝখান দিয়ে বেড়ে যাওয়া পুংদণ্ডে পাউডারের গুঁড়ার মত পুংরেণু থাকবে। পুংদণ্ডের শীর্ষভাগে গর্ভমুণ্ড থাকবে না। শুধু বোঁটার অগ্রভাগে ফুটে থাকা ফুলগুলো পুরুষ ফুল।
স্ত্রী ফুল : ক্ষুদ্রাকৃতি লাউয়ের মত গর্ভাশয়ধারী ফুলগুলো স্ত্রী ফুল। গর্ভাশয়ের ওপর থেকে পাপড়ি থাকবে। পুংদণ্ড থাকবে না। গর্ভদণ্ড ছোট ও মোটা। গর্ভদণ্ডে আঠালো পদার্থ থাকবে। পুংরেণু এখানে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আঠায় আটকে যায়। অনেকেরই ধারণা, শুধু স্ত্রী ফুলের এই গর্ভাশয় থাকলেই লাউ ধরবে। গর্ভমুণ্ডে পুরুষ ফুলের পুংরেণু না লাগা পর্যন্ত লাউ ধরবে না।
অন্যান্য কৌশল : ১. গর্ভাশয় ঝরে পড়াকে অনেকেই মনে করে কচি লাউ ঝরে পড়ে। সত্যিকারে তা নয়। যেসব স্ত্রী ফুল পুংরেণু দ্বারা নিষিক্ত হয় না অর্থাৎ পরাগায়ন হয় না সেগুলো ঝরে পড়ে। এ জন্য উপরোক্ত নিয়মে কৃত্রিম পরাগায়ন করতে হবে। এর পরেও ঝরে পড়লে গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি দিতে হবে। গাছপ্রতি ৫০ গ্রাম করে টিএসপি ও এমপি সার গাছের গোড়া থেকে ৬ ইঞ্চি দূর দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে।
২. কচি লাউ পচে যাওয়ার কারণ হচ্ছে ফ্রুট ফ্লাই পোকা কচি লাউয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে। এ ক্ষতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে লাউ পচিয়ে ফেলে। এ পোকা হাত দ্বারা মারা যায়। ছাই দেয়া যেতে পারে। অথবা ডায়াজিনন/ ডাইমেক্রন/ নগস ছিটাতে পারেন।
৩. লাউ গাছ খুব বড় হয় কিন্তু ফুল কম ধরে। এ জন্য জৈব সার কম দিতে হবে। টিএসপি ও এমপি সার সম্পূর্ণ মাত্রায় দিতে হবে। এছাড়াও গ্রোথ হরমোন স্প্রে করতে পারেন।
৪. ফুলের মধ্যে পিঁপড়া আক্রমণ করলে ছাই অথবা সেভিন ছিটাতে পারেন।
৫. ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য বিষটোপ অথবা ফাঁদ দিতে পারেন। যা হোক লাউ চাষে ওই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারলে লাউয়ের ফলন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়
কৃপ্র/ এম ইসলাম