কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
ধানের ফলন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একের পর এক সাফল্য রচনা করে চলেছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা। ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলন দেওয়ার রেকর্ড করেছে ব্রি হাইব্রিড ধান-৫। হেক্টরে ১০ টন বা বিঘায় সোয়া ৩৩ মণ পর্যন্ত ফলন দিচ্ছে এ ধান।
ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ চলতি বছর ১০ টন ফলন দিয়েছে। ২০১৬ সালে অবমুক্ত করার পর কয়েকটি বেসরকারি কোম্পানি, কৃষক, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এবং ব্রি’র গবেষণা মাঠে চাষ করে এ জাত থেকে এ ফলন পাওয়া গেছে।
ব্রি’র গবেষকরা বলছেন, এ জাত থেকে যে কোনো কৃষক ও নিবন্ধিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করতে পারবে। ব্রি এক্ষেত্রে বিনামূল্যে বীজ ও কারিগরি সহায়তা দেবে। কোনো কৃষক যদি উদ্ভাবিত বীজ বিপণন করতে চান, ব্রি তাহলে বিপণন সুবিধাও করে দেবে। জাতটির দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৩ থেকে ২৪ ভাগ। দানার আকৃতি সরু ও লম্বা। তাই ভাত ঝরঝরে হয়। দানায় প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। তা ছাড়া জাতটির গাছের উচ্চতা ১০৫-১১০ সেন্টিমিটার।
ব্রি-৫ জাতের উদ্ভাবক দলের অন্যতম সদস্য ও ব্রি’র হাইব্রিড রাইস ডিভিশনের প্রধান ড. মো. জামিল হাসান বলেন, ঘাতসহিষ্ণু এ জাতটির জীবনকাল ১৪৩-১৪৫ দিন। বেশি মাত্রায় শীত ও খরা হলেও এ জাত স্বাভাবিক ফলন ধরে রাখতে পারবে। তা ছাড়া কাণ্ড শক্ত বলে সামান্য ঝড়েও ঢলে পড়ার আশঙ্কা থাকে না। স্বাভাবিক অবস্থায় গাছপ্রতি গুচ্ছের সংখ্যা ১২ থেকে ১৫টি। তাই এখন পর্যন্ত অন্য যে কোনো জাতের চেয়ে এটিই উচ্চ ফলন দিতে সক্ষম।
ব্রি’র সাবেক মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস এ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশে বোরো মৌসুমে হাইব্রিড ধান চাষের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। উপযুক্ত জাত নির্বাচন, সঠিক সময়ে বীজ বপন, চারা রোপণ এবং উন্নত আন্তঃপরিচর্যার মাধ্যমে এ মৌসুমে হাইব্রিড ধান চাষ করে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।
ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, দেশের মোট ধান উৎপাদনের শতকরা প্রায় ৯১ ভাগই ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল ধানের জাত থেকে আসছে। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশে ধানের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে চালের চাহিদা পূরণে কাজ করছে ব্রি। নতুন ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ জাতটি কৃষকরাই যাতে উৎপাদন ও বিপণন করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম