কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
কৃষির উন্নয়নে ন্যানোপ্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ রেখে নতুন জাতীয় কৃষি নীতি অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আগের কৃষিনীতি ২০১৩ সালের। এর মধ্যে পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। সেটাকে আরেকটু হালনাগাদ করে নিয়ে আসা হয়েছে। ওটাকে যখেষ্ট সমৃদ্ধ করা হয়েছে। অনেকগুলো বিষয় এখানে অ্যাড্রেস করা হয়েছে যেগুলো আগের নীতিতে নেই। এটা বেশ ডিটেইল ও রিচ বলতে পারেন।’
‘নতুন কৃষি নীতিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। আগে ছিল ১৮টি অধ্যায় ও ৬৩টি অনুচ্ছেন। সেখানে এখন ২২টি অধ্যায় ও ১০৬টি অনুচ্ছেদ ও উপ-অনুচ্ছেদ হয়েছে।’
নতুন কৃষিনীতির অধ্যায়গুলো তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রথমে রয়েছে ভূমিকা, দ্বিতীয় অধ্যায়ে জাতীয় কৃষিনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তৃতীয় অধ্যায়ে রয়েছে কৃষি উন্নয়নে গবেষণা। গবেষণার ক্ষেত্রে ১৯টি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য অধ্যায়গুলোর মধ্যে রযেছে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষি উপকরণ, খামার যান্ত্রিকীকরণ, জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়ন, কৃষির পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিশেষ আঞ্চলিক কৃষি, বিশেষায়িত কৃষি, নিরাপদ খাদ্য ও কৃষি পণ্য উৎপাদন, কৃষি বিপণন, নারী ক্ষমতায়ন, কৃষিতে যুবশক্তি, কৃষিতে বিনিয়োগ, কৃষি সমবায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কৃষি খাতে শ্রম, সমন্বয় ও সহযোগিতা, বিবিধ বিষয়- এর মধ্যে মেধাস্বত্ব, জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক ) এগুলো আছে। এছাড়া রয়েছে বাংলা ভাষার প্রাধান্য ও উপসংহার অধ্যায়।’
শফিউল আলম বলেন, ‘আগে যেটা ছিল না, ন্যানো প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়টি এখানে আনা হয়েছে। মান ঘোষিত বীজ উৎপাদন ও নগরকেন্দ্রিক কৃষি সম্প্রসারণ সেবা- এই বিষয়টিও আগে ছিল না নতুন নীতিমালায় তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ন্যানো প্রযুক্তিকে গবেষণা বিষয় হিসেবে দেখানো আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ফসলের রোগ, ফসলের জাতভিত্তিক পুষ্টি চাহিদা নির্ণয়, পুষ্টি আহরণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।’ ‘ন্যানো সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমির গুণাগুণ পর্যবেক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এগুলো সবই গবেষণা অংশ।’
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সেবা, উদ্ভাবনী সম্প্রসারণ প্রযুক্তি, প্রযুক্তি ব্লক স্থাপন, বছরব্যাপী ফল উৎপাদন ইত্যাদি এগুলো আগে ছিল না, নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশ অঞ্চলের জন্য কৃষি কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়টি একটি অনুচ্ছেদে আলাদাভাবে অধ্যায় করে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। কৃষি উপকরণের বিষয়টিও নীতিতে সংযোজন করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
নতুন কৃষিনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘লক্ষ্য হচ্ছে নিরাপদ ও লাভজনক কৃষি এবং টেকসই খাদ্য পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন। প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ফসলের উৎপাদনশীলতা, উৎপাদন ও কৃষকের আয় বৃদ্ধি, শস্য বহুমুখীকরণ, পুষ্টি সমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন, লাভজনক কৃষি ও দক্ষ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।
কৃপ্র/এম ইসলাম