কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
মেহেরপুর জেলায় এবার কচুর ফলন ভালো হয়েছে। বাজারদর ভালো থাকায় জেলার সবজি চাষীদের কাছে কচু এখন অন্যতম অর্থকরী ফসল। বর্তমান দাম অপরিবর্তিত থাকলে এবার কচু বিক্রি করে গত মৌসুমের লোকসানও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকরা। খবর দৈনিক বনিক বার্তা অনলাইনের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলায় ১ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে কচু আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই কম হওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে। জেলায় এবার প্রায় ৩০ হাজার টন কচু উৎপাদন হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। মেহেরপুরে উৎপাদিত কচু ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
গাংনী উপজেলার মাইলমারী গ্রামের কচু চাষী কামরুল ইসলাম জানান, তিনি এবার দুই বিঘায় আউশ ও এক বিঘায় আমন কচু আবাদ করেছেন। মৌসুমের প্রথম দিকে কচুক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। তবে কীটনাশক প্রয়োগ করায় এ পোকা দূর হয়েছে। বিঘাপ্রতি কচু চাষে তার খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এখন ব্যবসায়ীরা আউশ কচু জমি থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বিঘা আউশ কচু বর্তমানে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে খরচ বাদে ১৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা লাভ হবে।
মুজিবনগর উপজেলার বাগুয়ান গ্রামের কচু চাষী আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মেহেরচণ্ডী কচুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এখানে উৎপাদিত ৮০ শতাংশ কচুই জেলার বাইরে সরবরাহ করা হয়। অন্যান্য সবজি চাষের তুলনায় কচু চাষে ঝুঁকি কম, কীটনাশকও কম প্রয়োগ করতে হয়। তবে ঘন ঘন সেচ দিতে হয়। এবার লাভ ভালো হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি করে কচুর চাষ করতে চান বলে জানান তিনি।
মিজানুর রহমান নামে এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, জেলার বাইরে মেহেরপুরে উৎপাদিত কচুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় জমি থেকেই ব্যবসায়ীরা আগাম কচু কিনে নেন। ফলে কচু ওঠানো ও বাজারজাত করার ঝামেলা থেকে অব্যাহতি পান কৃষকরা। তবে এক্ষেত্রে কৃষকের কোনো ক্ষতি না হলেও ব্যবসায়ীরা অনেক সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। কারণ গাছ দেখে প্রাক্কলিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কচু উৎপাদন নাও হতে পারে। তবে এবার দাম ভালো পাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম সাহাব উদ্দীন জানান, এ উপজেলায় বেশির ভাগ জমিতে মুখিকচুর আবাদ করা হয়। গতবার লোকসান হলেও এবার কচুর দাম ভালো। স্থানীয় হাটবাজারেও প্রতি কেজি কচু ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আকতারুজ্জামান বলেন, জেলার মেহেরচণ্ডী কচুর বেশ কদর আছে। গত বছর কচুর দাম কিছুটা কম ছিল। এ কারণে লোকসান হলেও তার পরিমাণ খুব কম। ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হননি। এ বছর কচুর দাম ও চাহিদা ভালো। আশা করি, জেলায় কচুর চাষ আরো বাড়বে।
কৃপ্র/এম ইসলাম