কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
দিনাজপুর জেলার বিরামপুর ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় চলছে তীব্র খরা। সেখানে আমনের মাঠজুড়ে চলছে পানির জন্য হাহাকার। আষাঢ় শেষ হতে চললেও এখনো দেখা নেই কাক্সিক্ষত বৃষ্টির। আমনের অবাদের জন্য এখনো মাঠ তৈরি করতে পারেনি অনেক কৃষক। ফলে বৃষ্টিনিভর্র আমন চাষ হুমকির মুখে। খবর যায়যায় দিন অন লাইনের।
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুরে চলছে তীব্র খরা। আমনের আবাদের জন্য এখনো মাঠ তৈরি করতে পারেনি অনেক কৃষক। যে সব কৃষক বিকল্প সেচের মাধ্যমে আমনের চারা রোপণ করছেন তাতে উৎপাদন খরচ পড়ছে বেশি। আমনের বীজতলা প্রস্তুত থাকলেও পানি সংকটে পতিত পড়ে রয়েছে জমি।
যদিও নিয়ামতপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, অনাবৃষ্টি চললেও আমন চাষ বিকল্প সেচের মাধ্যমে অব্যাহত রয়েছে। আর এ সেচের জন্য কৃষক ব্যবহার করছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের গভীর নলকুপ, খাল , খাড়ি ও পুকুরের পানি।
নিয়ামতপুর কৃষি অফিসসূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ইতোমধ্যে চল্লিশ শতাংস জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। বাকি জমিগুলো প্রস্তুত করছে কৃষক। এ ছাড়া বতর্মানে মাঠে রয়েছে ১০ হাজার হেক্টর আউস ধান (পারিজা, ব্রি-৪৮ ও জিরা), যা কিছু দিনের মধ্যে ঘরে তুলবে কৃষক।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠে দেখা গেছে, অনেক কৃষক আমনের মাঠ প্রস্তুত করলেও পরে তা পানি সংকটে শুকিয়ে পড়ে রয়েছে। এমন শুকিয়ে পড়া জমি পুনরায় প্রস্তুত করতে কৃষকের খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হবে বলছেন আমন চাষিরা। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষক সেচ কাযর্ক্রম অব্যাহত রেখেছে। ফলে ভরা বষাের্তও বাড়তি সেচের যোগান দিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। এ ছাড়া একটানা তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। নিয়ামতপুর কৃষি কমর্কতার্ বলেন, কয়েক দিন থেকে অনাবৃষ্টি চললেও আমন চাষের এখনো সময় রয়েছে। তাছাড়া বিকল্প সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষক ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ আমনের চারা রোপণ করে ফেলেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি হলে বাকি জমিতেও কৃষক চারা রোপণ করে ফেলবেন।
দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠের জল শুকিয়ে গেছে। শনিবার আষাঢ়ের ৩০ তারিখ হলেও বিরামপুরে একদফা বৃষ্টির পরে আর বৃষ্টির দেখা নেই। এখন এখানকার জমিগুলোতে ধুলা উড়ছে। উপজেলার কৃষকরা উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ আমন চারা রোপণ করে থাকে। কারণ আগাম আমন ধান কেটে কৃষকরা ওই জমিতে আলু ও ভুট্টার চাষ করে বাড়তি সফল ঘরে তুলে থাকেন। চলতি মৌসুমে মাঠে পানি না থাকায় কৃষকরা জলের আশায় আকাশ পানে চেয়ে প্রহর গুনছেন। কখন মেঘ জমে নামবে কাক্সিক্ষত বৃষ্টি। বিরামপুর উপজেলা কৃষি কমর্মতার্ নিকছন চন্দ্র পাল জানিয়েছেন, এ উপজেলায় ১৭ হাজার ৪৯৪ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়েছে।
বগুড়ার দুপচঁাচিয়া উপজেলার বিভিন্ন মাঠের জমিতে পানি নেই। পানি না থাকায় সঠিক সময়ে জমির মাটি চাষ করে তা আমন ধানের চারা রোপণের উপযোগী করতে পারছেনা চাষিরা। এতে করে চাষিরা রোপণ ও ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার দুপচঁাচিয়া উপজেলায় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়েছে। এর প্রায় সব ধানই উফশী জাতের। এগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বণার্, রণজিৎ, বীনা-৭, ব্রিধান-৪৯ উল্লেখযোগ্য। এ লক্ষ্যে প্রায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চারার বয়সও বেশি হয়েছে। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্বল্পসংখ্যক নিচু ও ডোবা জাতীয় জমি ছাড়া প্রায় সব জমিই পানিশূন্য হয়ে পড়েছে।বষার্কাল পড়লেও তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বেশির ভাগ উঁচু জমি শুকিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কমর্কতার্ মোস্তফা কামাল হোসেন জানান, সাধারণত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে আমন ধান রোপণের সঠিক সময়। তবে জমিতে পানি না থাকায় উপজেলার প্রায় সব এলাকার উঁচু জমিতে আমন ধান রোপণের দেরি হচ্ছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম