কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
নানা কারণে দেশে বিলুপ্তপ্রায় খলিশা মাছ। যার বৈজ্ঞানিক নাম Colisa fasciatus। আর আমাদের দেশে খৈলশা, খলিশা, খৈইলা নামেও পরিচিত। সম্প্রতি ময়মনসিংহের বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে সুস্বাদু এ মাছটির পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছে।
ইনস্টিটিউটের নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্র এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে। গবেষক হিসেবে ছিলেন উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খোন্দকার রাশিদুল হাসান এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শওকত আহমেদ।
গত ১২ জুলাই মাছটির কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন কলাকৌশল উদ্ভাবনে ওই বিজ্ঞানীরা সফলতা অর্জন করেন। জানা যায়, খলিশা মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে এবং চাষের জন্য পোনার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে স্বাদুপানি উপকেন্দ্র সৈয়দপুরে প্রাকৃতিক উৎস্য থেকে খলিশা মাছ সংগ্রহ করে পুকুরে ব্রুড প্রতিপালন, ডিম ধারণ ক্ষমতা নির্ণয়, সঠিক প্রজননকাল চিহ্নিতকরণসহ অন্যান্য গবেষণা করে আসছে।
গবেষণা সূত্র বলছে, পুকুরে ৮-১০ সেন্টিমিটার (১৫-২০ গ্রামের) খলিশা মাছ পরিপক্ব হয়ে থাকে। মাছটির বয়স, আকার ও ওজন অনুপাতে ডিম ধারণ ক্ষমতা ৫,০০০ থেকে ১৩,০০০ এবং প্রজননকাল মে থেকে সেপ্টেম্বর। প্রজনন মৌসুমে পরিপক্ব স্ত্রী ও পুরুষ মাছ পুকুর থেকে সংগ্রহ করে হ্যাচারি ট্যাঙ্কে ৫-৬ ঘণ্টা রাখা হয়। পরবর্তীতে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়। হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগের ১৩-১৫ ঘণ্টা পর মা খলিশা মাছ ডিম দেয়। ২০-২২ ঘণ্টা পর ডিম থেকে রেণু পোনা উৎপন্ন হয়।
এ প্রসঙ্গে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, খলিশা মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে খলিশা মাছ চাষের ক্ষেত্রে পোনা প্রাপ্তি সহজতর হবে এবং ভবিষ্যতে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে। ইতিমধ্যে ১৮টি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির পোনা উৎপাদন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে পাবদা, গুলশা, টেংরা, মহাশোল ইত্যাদি অন্যতম। সাম্প্রতিক সময়ে এসব মাছের প্রাপ্যতা বাজারে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এসব মাছের ক্রয়মূল্য সাধারণ ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে আছে। পর্যায়ক্রমে সব বিলুপ্তপ্রায় মাছকে খাবার টেবিলে ফিরিয়ে আনার জন্য ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সুত্র, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন / কৃপ্র/এম ইসলাম