কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
গ্যাস সংকটে এক বছরেরও বেশী সময় বন্ধ থাকার পর চালু হলেও দুই সপ্তাহের মাথায় ফের বন্ধ হয়ে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানার উৎপাদন। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় স্বাভাবিক নিয়মেই কারখানার ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর দৈনিক বনিক বার্তা অন লাইনের।
আশুগঞ্জ সার কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৫ মাসের মধ্যে মাত্র এক মাস গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে কারখানাটি। উৎপাদন বন্ধ থাকায় চাহিদা মেটাতে কারখানা যেমন আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে, তেমনি লাভজনক এ সরকারি সার কারখানা লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পর্যবসিত হতে চলেছে।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, এটি পুরোমাত্রায় চালু রাখতে ৪৮ থেকে ৫২ এমএম সিএফডি (মিলিয়নস অব কিউবিক ফিট পার ডে) গ্যাস প্রয়োজন হয়। দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সচল রাখতে গত বছরের ১৯ এপ্রিল আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস না পাওয়ায় এর পর থেকে কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছে। গ্যাস সংকটে দীর্ঘ ১৪ মাস কারখানা বন্ধ থাকার ফলে প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ টন উৎপাদনক্ষমতা হিসেবে প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা মূল্যমানের পাঁচ লাখ টন ইউরিয়া উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ ও মজুদ না থাকায় আমদানি করা সার দিয়ে কারখানার কমান্ড এরিয়াভুক্ত সাত জেলার ডিলারদের সার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হয়েছে। পাশাপাশি পরিচালন ব্যয় তো রয়েছেই।
এ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হতে থাকলে ধারাবাহিক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে থাকেন কারখানার শ্রমিকরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ জুন কারখানায় পুনরায় গ্যাস সরবরাহ দেয়া হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ কারখানা সচল করতে বেশ সময় লেগে যায়। ২ জুলাই ভোর থেকে উৎপাদনে ফিরে কারখানা। কিন্তু ১৯ জুলাই বিকালে হঠাৎ করে মৌখিক নির্দেশে আবার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।
এ ব্যাপারে বিসিআইসির পরিচালক (কারিগরি) প্রকৌশলী মো. আলী আক্কাস জানান, সারের মজুদ না থাকলেও বিদেশ থেকে আমদানি করা সার দিয়ে কারখানার কমান্ড এরিয়াভুক্ত সাত জেলায় সার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
জেলার সার সমিতির সভাপতি মো. জালাল উদ্দিন বলেন, এভাবে উৎপাদন বন্ধ থাকলে কারখানার অধীনস্থ সাত জেলার ডিলারদের চাহিদা মেটাতে সারের আমদানি নির্ভরতা আরো বাড়বে। বিদেশ থেকে আমদানি করা সারের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এছাড়া আমদানি করা এসব সার দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নিচে রাখার কারণে গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।
কৃপ্র/এম ইসলাম