কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এক দশক আগে সাতক্ষীরায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হতো। এর প্রায় অর্ধেক আখ আবাদ হতো তালা উপজেলায়। তবে পরবর্তী সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার জমিতে লবণাক্ততা বাড়তে থাকায় আখের আবাদ কমতে থাকে। চলতি মৌসুমে জেলায় মাত্র ১৫১ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে।
তবে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে বাংলাদেশ আখ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই) উদ্ভাবিত লবণসহিষ্ণু জাত। জেলার চাষীরা এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ঈশ্বরদী-৩৯ ও বিএসআরআই-৪৬ নামে দুটি লবণসহিষ্ণু জাত আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ দুই জাতের আখের আবাদ প্রসারের মাধ্যমে সাতক্ষীরায় গুড় উৎপাদন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব।
আখ চাষে লবণক্ততার সমস্যা নিরসনে বিএসআরআইয়ের সমন্বিত গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্পের অধীনে জেলায় ১০ হেক্টর জমিতে লবণসহিষ্ণু জাতের আখ আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঈশ্বরদী-৩৯ ও বিএসআরআই-৪৬ জাতের আখ আবাদ করে ভালো সফলতা পাওয়া গেছে। ঈশ্বরদী-৩৯ ও বিএসআরআই-৪৬ জাত আবাদ করে হেক্টরপ্রতি ১০০ টন আখ উৎপাদন হয়েছে। অথচ স্থানীয় জাত আবাদ করে প্রতি হেক্টরে আখ পাওয়া গেছে ৪০ থেকে ৫০ টন।
বিএসআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সমজিত কুমার পাল বলেন, উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লবণাক্ত পাঁচটি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে ঈশ্বরদী-৩৯ ও বিএসআরআই-৪৬ জাতের আখ চাষ করা হয়েছে। এ জাতগুলো যেমন উচ্চমাত্রার লবণ সহ্য করতে পারবে, তেমনি অধিক ফলন দেবে। রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাবও কম।
তিনি বলেন, এ দুই জাতের আখের আবাদ প্রসার করা গেলে গুড় উৎপাদনও বাড়বে। এসব জাতের আখ চাষে বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর আখ পাওয়া যাবে কমপক্ষে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকার। ফলে কৃষক লাভবান হবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলে আখ উৎপাদন আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যেই ঈশ্বরদী-৩৯ ও বিএসআরআই-৪৬ জাতের আখ চাষে সাফল্য পাওয়া গেছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম