কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
খুলনা ও বাগেরহাট জেলার চিংড়ি ঘেরের বাগদা চিংড়িতে ব্যাপকহারে ভাইরাস দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের অতি গরম ও অনাবৃষ্টিতে পানির স্তর নেমে যাওয়ার ফলে এই দুই জেলার অধিকাংশ ঘেরেই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ঘেরে মাছ মরে লালচে হয়ে ভেসে উঠছে। বেড়ির পাশে লালচে আকার ধারণ করে মাছ মরে পড়ে থাকছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনে অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে চিংড়িতে ভাইরাসের আক্রমণ দেখা দেয়।খুলনার পাইকগাছা উপজেলার বেতবুনিয়া গ্রামের চিংড়ি চাষি আবুল বাশার ও বাবুল সরদার বলেন, বাগদা চিংড়িতে ভয়াবহ ভাইরাসের কারণে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। এক হাজার বিঘা ঘেরে ইতিমধ্যে ৫০/৬০ ভাগ বাগদা চিংড়িতে ভাইরাস লেগেছে। খরচের টাকাও উঠবে না। এখন হাড়ির (জমি ভাড়া) টাকা পরিশোধ নিয়েই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
জিএম রাসেল নামের এক চাষি জানান, কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের উলাকুশোডাঙ্গা গ্রামের ৯টি হ্যাচারির মধ্যে ৮টিতেই এই বছরে দু’বার করে মাছ ছাড়ার পরেও ভাইরাসজনিত কারণে মারা যাচ্ছে।
খুলনার কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, ভাইরাসের কারণে দিশাহারা হয়ে পড়েছে চাষিরা। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের অবস্থা খুবই করুণ।
বাগেরহাটের মংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের সুন্দরতলা গ্রামের ঘের মালিক বিজন বৈদ্য বলেন, বিগত কয়েক বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য এবার অনেকেই বেশি করে বাগদা চিংড়ির চাষ করেন। অনেকে বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আবার কেউ মহাজনদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে ঘের করে বাগদা চিংড়ির চাষ করেন। আবার কোন কোন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী অন্যের জমি লিজ নিয়েও বাগদা চিংড়ি চাষ করেছেন। হঠাত্ করে মৌসুমের শেষে মংলা ও রামপালে ১শ’ বাগদা চিংড়ি ঘেরের মধ্যে ৯৫ টিতে ভাইরাস লাগায় লালচে হয়ে চিংড়ি মরে যাচ্ছে।
খুলনা জেলা মত্স্য অফিসের জরিপ কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র মন্ডল বলেন, তাপামাত্রা কম-বেশি হওয়া, পানির স্বল্পতা, ঘের তৈরির সময় সঠিক নিয়ম না মানার কারণে মাছে ভাইরাস লেগে থাকে। এ বছর ৫ ভাগ জমিতে ভাইরাস লেগেছে বলে দাবি করেন তিনি।
বাগেরহাট জেলা মত্স্য কর্মকর্তা মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী বলেন, বাগেরহাটে ৫২ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে ৩৫ হাজার চিংড়ি ঘের রয়েছে। প্রথম দিকে প্রাকৃতিক কারণে ভাইরাস লেগে কিছু মাছ মারা গেলেও এখন তা নেই।
সুত্র, ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম