কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ না পাওয়ায় কষ্টে দিনযাপন করছেন ভোলার জেলেরা। আর ইলিশের এ আকালের কারণ হিসাবে সামুদ্রিক স্রোতের পরিবর্তন ও উজান থেকে পলিযুক্ত পানির কম প্রবাহসহ একাধিক কারন রয়েছে বলে ধারনা করছে মৎস্য বিভাগ। মহাজনদের টাকায় নৌকা আর জাল কিনে জেলেরা দিশেহারা।
উভয় নদীর তীরে বসবাসরত জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের বছরগুলোতে এ সময়ে মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পড়ত। এখন জাটকা মৌসুম ও প্রজননকালীন নিষেধাজ্ঞা আমরা পালন করি। তবুও ইলিশের আকাল।
ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিনে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৮ হাজার ৬৯৮ জন। বেসরকারি মতে এর সংখ্যা আরো বেশি। গত বছর এ উপজেলা থেকে ইলিশ আরোহণ করা হয় ৮ হাজার ৯০৩ মেট্রিক টন। সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরু থেকে কার্তিকের শেষ পযন্ত ইলিশ ধরার মৌসুম। আষাঢ শ্রাবণ হচ্ছে ইলিশের ভরা মৌসুম। অথচ শ্রাবণের শেষে এসেও নদীতে মাছ নেই।
জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি শাহ আলম জানান, উপজেলার অর্ধেক মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে নদীর মাছ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। নদীতে মাছ না থাকায় অনেক জেলেই তীরে বসে অবসর সময় কাটান। মেঘনার আলিমুদ্দিন বাংলাবাজার ঘাটের জেলে আফজাল, রফিক সাতবাড়িয়া ঘাটের হুমায়ূন, জাফর, দিদারমাজি ঘাট এলাকার গিয়াসউদ্দিন, মির্জাকালু ঘাট এলাকার হোসেন, রুহুল আমিন, তেতুলিয়া নদীর রশিদ, তুহিন মাঝি জানান, ‘একবার নদীতে জাল ফেলতে গেলে যে খরচ হয়, মাছ বেছে তার অর্ধেক আয় হয় না। তারপর তো দাদনদারের ট্যাহা।’
মেঘনা নদীর বড় দাদনদার জাহাঙ্গীর মাঝি, তেতুলিয়া নদীর কালাম বর্দ্দার জানান, সাধারণত আগস্ট থেকে অক্টোবর এই ৩ মাস এবং জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি দু মাস মাছ নদীতে মাছ পড়ার কথা। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এএফএম নাজমুস সালেহীন জানান, উপজেলা পর্যায়ে মাছ না পড়ার অনেক গুলো ফ্যাক্টর আছে। তবে সামুদ্রিক স্রোতের প্রভাব ও উজান থেকে পলিযুক্ত পানির কম প্রবাহ হওয়ায় ইলিশ কম পড়ছে। প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারণে অনেক সময় সমুদ্র থেকে নদীতে ইলিশের প্রবেশ কিছুটা আগে পরে হতে পারে। তবে আশা করা যায অমাবশ্যার জোয়ারের সঙ্গে সঙ্গে নদীতে ইলিশের প্রবেশ ঘটবে।
তথ্যসুত্র, দৈনিক ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম