কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
চলতি মৌসুমে শরীয়তপুর জেলায় আট হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। এ মৌসুমে বর্ষার পানি তুলনামূলক কম হওয়ায় ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে রোপা আমন আবাদ হবে বলে বলেছেন জেলার কৃষক ও কৃষি বিভাগ। তাছাড়া গত মৌসুমে ধানের বাজারমূল্য ভালো থাকায়ও এবং গো-খাদ্য হিসেবে খড়ের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান আবাদে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে।
শরীয়তপুরের কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এবার জেলায় ৮ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে হেক্টরপ্রতি ৩.১ মে. টন ফলন হবে বলে আশাবাদি স্থানীয় কৃষি বিভাগ। তাতে জেলায় এ মৌসুমে মোট ২৫ হাজার ৮৩৯ মে. টন চাল উৎপাদন হবে বলে মনে করছে তারা।
মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তার ফলে গত মৌসুমে জেলার ৬ উপজেলার কৃষকরা উচ্চ ফলনশীন জাতের রোপা আমন আবাদ করে লাভবান হওয়ায় রোপা আমন আবাদের দিকে ঝুকছেন কৃষকরা। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাগণ প্রতিটি ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে রোপা আমন আবাদ কৌশল পার্সিং, লাইনসুইং, নিয়মমাফিক পরিচর্যা বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করায় উৎপাদন খরচও কমে আসছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ^র ইউনিয়নের বালাখানা গ্রামের কৃষক বাবু সিকদার বলেন, গত বার ১৫০ শতক জমিতে রোপা আমন আবাদ করে ভাল ফলন ও দাম পাওয়ায় এবার ২৫০ শতক জমিতে উফশী জাতের রোপা আমন আবাদ করেছি। এবার আবহাওয়া রোপা আমনের অনুকূলে থাকায় ও কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মতো আবাদ করায় ভালো ফলন পাবো বলে আশা করছি।
আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সিকদার জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ব্যাপক উদ্বুদ্ধকরণের ফলে এবার রোপা আমন আবাদ বিগত যে কোন মৌসুম থেকে বেশি হয়েছে। এ মৌসুমে আঙ্গারিয়া ইউনিয়নে গত মৌসুমের চেয়ে ৬৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। ধান ও গো-খাদ্য হিসেবে খড়ের বাজারমূল্য বেশী পাওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে ব্যাপক হারে রোপা আমনের আবাদ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শরীয়তপুরের উপ পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম মহিউদ্দিন জানান, ধানের স্থিতিশীল বাজারমূল্যের কারণে জেলার ধান চাষিরা বেশ খুশী। তারা ধানের বাজার মূল্য বেশী পেয়ে নতুন উদ্যমে লক্ষমাত্রার চেয়েওে বেশি জমিতে রোপা আমন আবাদ করছেন। ইতিমধ্যে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮৫ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার শরীয়তপুরের কৃষকরা রোপা আমনের ভাল ফলন পেয়ে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবেও বেশ লাভবান হবেন বলেও আশা করছি। তবে এ ধারবাহিকতা অব্যাহত রাখতে ধানের লাভজনক বাজার স্থিতিশীল রাখা খুবই জরুরী।
সুত্র, বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম