‘ব্রেডফ্রুট বা রুটিফল সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
ব্রেডফ্রুট বা রুটিফল প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানুষের এটি প্রধান খাবার।এ ফলের বাহির ও ভিতরটা দেখতে কাঁঠালের মতো। এটি একটি যৌগিক ফল। কাঁঠালের আঠার মতো আঠাও আছে। ভেতরে কাঁঠালের মতোই কোষ আছে। ৫০ ফুটেরও বেশি লম্বা হয় রুটিফল গাছ। গাছের পাতা ডেউয়া গাছের মতো বড় বড়। শাখাগুলো বিস্তৃত।
ব্রেডফ্রুট বা রুটিফলের আদি বাস দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। ১৮ শতকের দিকে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে এ ফল আনা হয় কৃতদাসদের জন্য সস্তা খাবারের উৎস হিসেবে। এখন অনেক দ্বীপের প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ব্রেডফ্রুট। এই সমস্ত অঞ্চলে রুটিফলকে রোস্ট করে খাওয়া হয়।
শ্রীলঙ্কা থেকে একটি ব্রেডফ্রুট বা রুটিফল গাছ নিয়ে আসেন বাংলাদেশের একজন সামরিক কমর্কতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ গাছটি উপহার দেন তিনি । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বোটানিক্যাল গার্ডেনে পরিপূণর্ভাবে বেড়ে উঠেছে রুটিফল গাছটি। ওশেনিয়া অঞ্চলের রুটিফলের গাছ এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগানে। ফল এসেছে গাছ ভরে। শিকড় থেকে জন্মানো আরও একটি চারা বড় হয়েছে। বিশাল শাখা বিস্তৃত এই গাছ সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ। রুটিফলের গাছ বাংলাদেশের পরিবেশের জন্যও উপযোগী বলে মনে করা হচ্ছে।
রুটিফলে প্রোটিন, ভিটামিনসহ অন্যান্য উপাদানও রয়েছে। তাই ভাত, রুটি, কাসাভা এবং ভুট্টা জাতীয় শকর্রা সমৃদ্ধ ফসলের বিকল্প হিসেবেই এটা ব্যবহার করা যায়। দিনে দিনে এই ফল ছড়িয়ে পরেছে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, ইন্ডিয়া, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণপূবর্ এশিয়া, মাদাগাস্কার, মালদ্বীপ, ফ্লোরিডা এবং উত্তর অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ৯০টি দেশে।
ব্রেডফ্রট ইন্সটিটিউটের এথনোবটানিস্ট ডায়েন রেগোনি জানান, রুটি ফল যে কোনো স্টেজে খাওয়া যেতে পারে। যখন ছোট থাকে তখন এটা খেতে আরটিচোকের মতো লাগে, যখন এরা ম্যাচিউর করে তখন আলুর মতো আর যখন এটা পেকে যায় তখন ডেসাটর্ হিসেবে খাওয়া যায়।
রেগোনি বহু বছর ব্যয় করেছেন এই ফলের ওপর গবেষণা করে এবং পৃথিবীর দরিদ্র এলাকায় এ ফলের চাষ প্রসারের চেষ্টা করে চলেছেন। তার মতে রুটি ফল গাছ দ্রুত বাড়ে, পরিচযার্র জন্য অনেক কম পরিশ্রমের দরকার হয়, কম সার এবং কম পেস্টিসাইড দরকার হয়। একটি গাছ বছরে ২৫০ টির মতো ফল উৎপাদন করে থাকে, যা একটি পরিবারের আহার জোগানোর জন্য যথেষ্ট বলে মনে করেন তিনি।
বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকষর্ণ করতে পেরেছে এই ফল এবং প্রচুর গবেষণা হয়েছে এর ওপর। এই ফলের গুরুত্ব উপলব্ধি করে গবেষণা হয়েছে ক্যান্সার, হাটের্র অসুখ, ইনফ্লামেশন ইত্যাদি অসুখ নিরাময়ে এই ফলের ভূমিকা নিয়ে। এমাইনো এসিডে পরিপূণর্ এই ফল।
কৃপ্র/এম ইসলাম