‘সুগন্ধি ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে’
মোঃ আরিফুর রহমান।।
বাংলাদেশের সুগন্ধি চিকন চালের দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গ্রাম বা শহরে ধনী কিংবা গরিব সবার উৎসব, বিয়ে, ঈদ, পূজায় অতিথি আপ্যায়নে সুগন্ধি চালের তৈরি পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েস, ফিন্নি, পিঠাপুলিসহ নানান মুখরোচক খাবার আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। এ ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে এটি স্থান করে নিয়েছে খাবার হোটেল, রেস্তোরা এমনকি পাঁচতারকা হোটেলে।
দীর্ঘকাল ধরে আমাদের দেশের কৃষকরা চিকন চাল উৎপাদনের জন্য প্রচলিত জাত কাটারিভোগ, কালিজিরা, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপসহ বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি ধান চাষ করে আসছে। প্রচলিত এসব জাত চাষাবাদে ফলন কম হওয়ায় অনেক কৃষক সুগন্ধি ধান চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
তবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কৃষি বিজ্ঞানীরা সুগন্ধি ধান চাষে এনেছেন বিপ্লব। স্বাদ ও গন্ধ অক্ষুন্ন রেখে বিভিন্ন উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন তারা। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ সুগন্ধি ধান উৎপাদনের উপযোগী। বিশেষ করে পঞ্চগড়, রংপুর, নওগাঁ , ঠাকুরগাঁও দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলায় সুগন্ধি ধান বেশি উৎপাদিত হয়।
কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত এসব জাতের মধ্যে রয়েছে বিআর৫, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৭, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৭০, ব্রি ধান৭৫, ব্রি ধান৮০, বিনা ধান১৩ ,বিইউ সুগন্ধি হাইব্রিড ধান-১, ব্রি ধান৩৪। ব্রি ধান৭০ ধানের চাল দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী কাটারিভোগের চেয়ে আরও বেশি লম্বা আর ব্রি ধান৮০ থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় জেসমিন ধানের মতো, সুগন্ধিযুক্ত এবং খেতেও সুস্বাদু।
বিদেশ থেকে আমদানিকৃত বাসমতি চালের স্থান দখল করে নিচ্ছে আমাদের বাংলামতি চাল। আমদানিকৃত বিদেশি বাসমতি চালের চেয়ে দাম অনেক কম, দেশি অন্যান্য সুগন্ধি জাতের ধানের চেয়ে ফলন বেশি হওয়ায় বাংলামতি ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিনে দিনে বাড়ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছে আমাদের সুগন্ধি চালের ব্যাপক চাহিদা। বাংলাদেশ প্যাকেটজাত সুগন্ধি চাল ১৩৬টি দেশে রপ্তানি করছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম