কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
উপকুলীয় এলাকার নদী, খাল, বিল, পুকুর নালা এখন পানিতে টই-টম্বুর। এ সকল জলাশয়ে চিংড়ি ও নানা প্রজাতির দেশীয় মাছের আধিক্য। উপকূলের গ্রামাঞ্চলে এসব চিংড়ি ও দেশীয় মিঠা পানির মাছ ধরার জন্য পেশাদার বা অপেশাদার মাছ শিকারীরা ব্যবহার করছেন বাঁশের তৈরী ফাঁদ ‘চাঁই’। গ্রীষ্মের শুরু থেকেই ‘চাঁই’ দিয়ে মাছ ধরা শুরু করেন স্থানীয়রা, চলে টানা আশ্বিন মাসের শেষ পর্যন্ত।
গ্রামাঞ্চলে মাছ ধরার সবচেয়ে আদি ও পুরনো উপকরণের মধ্যে বাঁশের তৈরী ফাঁদ ‘চাঁই’ অন্যতম। উপকূলীয় বরগুনা, পটুয়াখালী, জেলার সর্বত্র বাঁশের ‘চাঁই’ তৈরী, বিকিকিনি ও ব্যবহার করা হয়। মৌসুমে এলাকার বাজারগুলোতে ও হাটবারে হাজার হাজার ‘চাঁই’ বিক্রি হয়। স্থানীয়ভাবে ‘চাঁই’ তৈরী হলেও মূলত বাজারগুলোতে পিরোজপুরের ‘চাঁই’ দামে সস্তা হওয়ায় বেশী বিক্রি হচ্ছে। গড়ে একজোড়া ‘চাঁই’ ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে বাজারগুলোতে।
তবে প্রকারভেদে মাছ ধরার এসব সামগ্রীর দাম প্রতিটি ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। পিরোজপুরের কাউখালীর ‘চাঁই’ বিক্রেতা আরমান হোসেন জানান, বিভিন্ন হাটে একেকদিন তিনি ৩০ থেকে ৫০টি ‘চাঁই’ বিক্রি করে থাকেন। গত বছরের চেয়ে এবার বিক্রি বেশি। তার মতো আরো ১০-১৫ জন বিক্রেতা বরগুনার বিভিন্ন হাটে ‘চাঁই’ বিক্রি করছেন।
আমতলী উপজেলার ঘটখালী গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, মাঠ-ঘাট পানিতে ভরে আছে। পানিতে দেশীয় পুঁটি, কই, শিং, মাগুরসহ নানা মাছ দেখা যাচ্ছে। ওসব মাছ ধরার জন্য ‘চাঁই’ কিনেছেন। তিনি জানান, প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত মাছ পাওয়া যায়। খাবার বাদ দিয়ে বাকি মাছ বাজারে বিক্রি করেন। বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ এলাকার হোসেন মিয়া জানান, তিনি এ বছর ২০টি ‘চাঁই’ কিনেছেন । খালে-বিলে মাছ পাওয়া যাচ্ছে ভালোই। সেই সঙ্গে বেড়েছে ‘চাঁই’য়ের কদর।
জেলা মৎস্য বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা রবীন্দ্র নাথ জানিয়েছেন, ‘মাছ শিকারের সহজ উপকরণ ‘চাঁই’ এর ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। নিয়মিত ‘চাঁই’ তুলতে হয়। দীর্ঘ মেয়াদে জলাশয়ে ‘চাঁই’ পড়ে থাকলে কিংবা হারিয়ে গেলে শুধু শুধু মাছ মারা পড়বে।’
সুত্র, বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম