কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
সবজি উৎপাদনে দেশের যেকোনো জেলার চেয়ে এগিয়ে বগুড়া। এবার এ জেলা শীতকালীন সবজি উৎপাদনে রেকর্ড গড়বে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষি বিভাগের হিসাবে, গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবার অন্তত ২০০ হেক্টর বেশি জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। সে হিসাবে উৎপাদন আশা করা হচ্ছে প্রায় তিন লাখ টন। তথ্যসুত্র- দৈনিক বনিক বার্তা।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বগুড়ায় সারা বছরই সবজি চাষ হয়। তবে মূলত শীতকালকেই টার্গেট করেন চাষীরা। প্রতি শীত মৌসুমে যে পরিমাণ সবজি চাষ হয়, তার অর্ধেকই বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। উত্তরের জেলাগুলোর মধ্যে বগুড়ায় সব ধরনের সবজি চাষ হয়। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, শীতের সবজি হিসেবে টমেটো, লাউ, শিম, বাঁধাকপি, বেগুনসহ ২৮ প্রকারের সবজি চাষ হয় বগুড়ায়।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শাজাহানপুর, শিবগঞ্জ, শেরপুর, ধুনট, বগুড়া সদর, কাহালু, নন্দীগ্রামসহ ১২ উপজেলাতেই কমবেশি সবজি চাষ হয়। গত বছর বেশ ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর ২০০ হেক্টর বেশি জমিতে সবজি চাষ হয়েছে, এমন তথ্য দিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সবজিচাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় নিজেরাই পরিচর্যার কাজে লেগেছেন। জমিতে পরিচর্যা থেকে বাজারে নেয়া পর্যন্ত সব কাজই পরিবারের লোকজন নিয়ে করছেন। আর এবার তারা জৈব সারের ওপর বেশি জোর দিয়েছেন।
শেরপুর উপজেলার ফুলবাড়ী এলাকার মেরিনা, মোমিন, আনিছ, হাতেম জানান, তারা এবার ফুলকপি, পাতাকপি, পালংশাক, লালশাক, কলমিশাক, শালুকসহ প্রায় ২০ প্রকার সবজি চাষ করেছেন। অনেকে একই জমিতে তিন বা তার অধিক সবজি চাষ করেছেন। অনেকে জমির পাশাপাশি বাড়ির উঠোন, জমির আইলেও সবজি চাষ করেছেন। শিমের ভালো দাম পাওয়ায় বেশির ভাগ কৃষকই শিম চাষ করেছেন।
এদিকে এরই মধ্যে স্থানীয় বাজারে শীতের সবজি উঠতে শুরু করেছে। দামও বেশি। বগুড়ায় এখন বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, লাউ আকার অনুযায়ী প্রতিটি ২০-৩০ টাকা, ফুলকপি ৮০, বাঁধাকপি ৪০ টাকা প্রতিটি এবং টমেটো ১০০, গাজর ১০০, মুলা ৩০, বরবটি ৬০ ও ধনেপাতা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, এবার বগুড়ায় ১২ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ২০০ হেক্টর বেশি। আগাম জাতের সবজি বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। এবার প্রতি হেক্টরে ফলন ধরা হয়েছে সাড়ে ২২ টন। সে হিসাবে বগুড়া জেলায় প্রায় তিন লাখ টন সবজি উৎপাদন হতে পারে। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টন।
তবে তাপমাত্রা ও বাতাসে আর্দ্রতা বাড়লে সবজিতে রোগবালাই ও পোকার আক্রমণ হতে পারে। তাছাড়া দিনে-রাতে তাপমাত্রার অত্যধিক তারতম্যের কারণেও সমস্যা হয়। এ রকম আবহাওয়ায় বিটল পোকা, পাতা খাতক, রস চোষা পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। এসব বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তারা সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান প্রতুল চন্দ্র সরকার।
কৃপ্র/এম ইসলাম