কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ জয়পুরহাট জেলায় আগাম জাতের কিছু রোপা আমন ধান কাটা শুরু হলেও পুরো কাটা-মাড়াই মৌসুম শুরু হবে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। স্বপ্নের ফসল রোপা আমন ধান ঘরে তোলার অপেক্ষায় এখন দিন গুনছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। জেলার মাঠ ঘাট জুড়ে আমন ধানের নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখ জুড়ানো কাঁচা-পাকা ধান এখন সোনালী রং ধারণ করতে শুরু করেছে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় এবার রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। জেলায় চলতি ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে ৬৯ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ৬১ হাজার ৮৬২ হেক্টর, হাইব্রীড জাতের ৭ হাজার ৩৬০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের রয়েছে এক হাজার ৪২৮ হেক্টর। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২১ হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন চাল । উপজেলা ভিত্তিক রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট সদরে ১৬ হাজার ৯৯৫ হেক্টর, পাঁচবিবি উপজেলায় ১৯ হাজার ৩৫৫ হেক্টর, আক্কেলপুরে ১০ হাজার ৬৪৩ হেক্টর, ক্ষেতলাল উপজেলায় ১০ হাজার ৭৪০ হেক্টর ও কালাই উপজেলায় ১১ হাজার ৯১৭ হেক্টর। জেলায় রোপা আমন চাষ সফল করতে কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ৩ হাজার ৪১১ হেক্টর জমিতে এবার বীজতলা তৈরি করা হয়। খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটে রোপা আমন চাষ সফল করতে মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আগাম জাতের কিছু ধান বিশেষ করে আতব, ১৭ ও ৭৫ জাতের আমন ধান টুকটাক কাটা শুরু হয়েছে। তবে পুরো মাড়াই মৌসুম শুরু হবে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। স্বপ্নের ফসল রোপা আমন ধান ঘরে তোলার অপেক্ষায় এখন দিন গুনছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। জেলার মাঠ ঘাট জুড়ে এখন আমন ধানের নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখ জুড়ানো কাঁচা-পাকা ধান এখন সোনালী রং ধারণ করতে শুরু করেছে। সদর উপজেলার কড়ই গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক বলেন, জমিতে থাকা আমন ধানের বাম্পার ফলন দেখে ঘাম ঝড়ানো কষ্ট ভুলে গেছি। পাশের সোনারপাড়া গ্রামের দ্বিজেন চন্দ্র জানান, এবার ৫ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন ফলনও ভালো হয়েছে এতে খুশি বলে জানান তিনি।
কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় আমন ধান চাষ সফল করতে স্থানীয় বিএডিসি (বীজ) কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা করে। প্রথম দিকে বৃষ্টিপাতের কিছুটা সমস্যা থাকলেও পরে আশানুরুপ বৃষ্টিপাতের ফলে রোপা আমনের চারা রোপণে আর কোন সমস্যা হয়নি বলে বাসস’কে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন।
উল্লেখ্য, গত ২০২২-২৩ রোপা আমন চাষ মৌসুমে জেলায় ৭১ হাজার ৩শ ৪০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছিল। এতে উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৫১ হাজার ৫ শ ৮২ মেট্রিক টন চাল। যা জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছিল বলে জানায় কৃষি সম্প্্রসারণ অধিদপ্তর।
সুত্রঃ বাসস / এম ইসলাম