কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ভুজপুরে রাবার ড্যাম তৈরি, দূষণসহ বিভিন্ন কারণে হালদা নদীর পরিবেশ দিন দিন মাছের প্রজননের প্রতিকূলে চলে যাচ্ছে। ফলে প্রতিবছর মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ কমছে। অন্যদিকে, নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কমে গেছে। সে কারণে হ্রদে মাছের উৎপাদন পোনা অবমুক্ত করার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম ও রাঙামাটিতে আয়োজিত দুটি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
আমাদের পরিচয় মাছে-ভাতে বাঙালি হিসেবে। আমরা মাছ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করি। অথচ মানুষের অসচেতনতার কারণে সেই মাছের প্রজনন ঠিকভাবে হচ্ছে না। দেশ থেকে ইতিমধ্যে অনেক প্রজাতির দেশি মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র চট্টগ্রামের হালদা নদী। জাতীয় অর্থনীতিতে হালদার অবদান বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা, যা দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ৬ শতাংশ। কিন্তু রাবার ড্যাম, স্লুইসগেট নির্মাণ এবং অপরিকল্পিতভাবে বাঁক কাটার কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিভিন্ন ধরনের দূষণও নদীর সর্বনাশ করছে। ফলে মাছের প্রজনন বিঘ্নিত হচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
কাপ্তাই হ্রদও মাছের অন্যতম প্রজননকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে মোট ৭২ প্রজাতির মাছ চাষ হয়। কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, মা–মাছের চলাচলের পথ সংকীর্ণ হয়ে পড়াসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে হ্রদে প্রাকৃতিক প্রজনন আগের চেয়ে কমে গেছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক। সংবাদ সম্মেলনের তথ্য অনুযায়ী, সৃষ্টির ৫২ বছরেও মাছের উৎপাদন নিয়ে কাপ্তাই হ্রদে কোনো জরিপ হয়নি। এটা চূড়ান্ত গাফিলতির নজির। মাছের এ দুটি প্রজননকেন্দ্রের পরিবেশ প্রজনন উপযোগী করতে উদ্যোগ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। সেই সঙ্গে নদীর দূষণ বন্ধ করতে জনসাধারণের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ জাগাতে হবে। মৎস্য বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষের এদিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
সুত্রঃ prothom-alo.com/কৃপ্র/এম ইসলাম