কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বাংলাদেশের ‘জীববৈচিত্র্য’ আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে আইন করার প্রস্তাব করেছেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। গত বুধবার মন্ত্রী ‘বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য বিল-২০১৬’ সংসদে তোলেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে এক মাসের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলটি উত্থাপনের সময় জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম আপত্তি দেন। তিনি তার আপত্তিতে বলেন, “বিলে সংবিধানের ১৮ক অনুচ্ছেদের আংশিক নেওয়া হয়েছে।” তার আপত্তির বিষয়টি ডেপুটি স্পিকার ভোটে দিলে তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশের কোনো ‘জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ’ এর বিষয়ে তথ্য বা জ্ঞান সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা বা বাণিজ্যিক ব্যবহার করতে পারবে না। এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে বিদেশি নাগরিক বা অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে। বিলে বলা হয়, জীববৈচিত্র্য আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। প্রস্তাবিত আইনে জীববৈচিত্র্য বা এ সম্পর্কিত জ্ঞান ব্যবহারের অনুমতি দিতে একটি জাতীয় কমিটি গঠনের কথা বলা রয়েছে। এছাড়া জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কারিগরি কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, পৌরসভা কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি, তৃণমুল কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি দেশ। জাতসংঘ জীববৈচিত্র্য সনদের অংশীদার হিসাবে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উহার উপাদানসমূহের টেকসই ব্যবহার, জীবসম্পদ ও তদসংশ্লিষ্ট জ্ঞান ব্যবহার হতে প্রাপ্ত সুফলের সুষ্ঠু ও ন্যায্য হিস্যা বণ্টন এবং আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য বিল-২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে।” প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি, জাতীয় কমিটির পূর্বানুমোদন ব্যতীত, কোনো জীবসম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্ভাবিত কোনো কিছুর মেধাস্বত্ত্ব অধিকারের জন্য বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের বাইরে আবেদন করতে পারবে না।
সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন। তাছাড়া এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ ‘কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভার্সিটি’তে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর করেছে। এই দুই বাধ্যবাধকতার কারণে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।