কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশের চার বিভাগের ১৬ জেলা ও ৫৯ উপজেলায় ৬০ হাজার পরিবারের ১৫ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব মানুষ ৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে। এদের জন্য সরকারি সহায়তা হিসেবে ১৩ হাজার মেট্রিক টন চাল, নগদ ৭ কোটি টাকা এবং ৫০০ বাণ্ডেল ঢেউটিন সরবরাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের সংরক্ষিত তহবিল থেকেও খাদ্য ও অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, খবর ইত্তেফাক।
এবারের বন্যায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব জায়গায় ৩৬৪টি মেডিক্যাল টিম ও অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবদের নেতৃত্বে তদারকি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ সহায়তা পান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম জানিয়েছেন, ত্রাণ নিয়ে কোনো রকম দুর্নীতি, অনিয়ম সরকার মানবে না। যারাই এ কাজে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল গতকাল সোমবার ইত্তেফাককে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে তাত্ক্ষণিক ত্রাণ সহায়তা ছাড়াও এখন থেকেই পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, মত্স্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড সমন্বিতভাবে এসব পুনর্বাসনের কাজ করবে।
এর বাইরে রাস্তা সংস্কারের কাজে নিয়োজিত কর্মীদের দিয়ে এবার বন্যাকবলিত মানুষদের ঘর-বাড়ি উঁচু করে দেওয়া হবে। ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যার পানি কতদূর পর্যন্ত উপরে উঠেছিল সেটির পরিমাপ ধরে উঁচু করা হবে ঘর-বাড়ি। যাতে ভবিষ্যতে সামান্য বন্যায় এসব বাড়ি-ঘরে পানি না ওঠে এবং তাদের বাড়ি-ঘর ছাড়তে না হয়। সম্পূর্ণ সরকারি খরচে যাদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে তাদের মধ্যে যারা নারী গৃহকর্ত্রী, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বের মানুষ, প্রতিবন্ধী মানুষ তারা অগ্রাধিকার পাবেন। বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে যাতে সুপেয় পানির সংকট না হয়, সেজন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় গভীর নলকূপ বসানোর ব্যবস্থা করেছে। রাস্তাঘাট ঠিক করতে এলজিইডি রাস্তার পরিমাপও শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড গাইবান্ধা ও নীলফামারী এবং ফরিদপুরে ভেঙে যাওয়া বাঁধ নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। মত্স্য চাষিদের প্রয়োজনীয় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ও যেসব জায়গায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দিতে হিসেব-নিকেষ করছে।