কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ লালমনিরহাট জেলা সদরের কুলাঘাট ইউনিয়নের বনগ্রামে সরকারি খাস পুকুর ফুলসাগর থেকে কতিপয় ভূমিদস্যু বোমারু মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে ভূ-গর্ভস্থ লাখ লাখ টাকার মূল্যের বালু উত্তোলন করেছে। এর ফলে ফুলসাগরের গভীরতা ৪০ ফুট হয়ে গেছে। পাড় ভাঙ্গতে শুরু করেছে। ঝুঁকির মুখে পড়েছে বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাস্তা ও গ্রামটি। নিরীহ গ্রামবাসীরা এ অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে প্রতিবাদ করায় ভূমি খেকোরা তাদের সন্ত্রাসীবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
কুলাঘাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, কুলঘাট ইউনিয়নের বনগ্রাম মৌজায় কয়েক একর জমির উপর একটি খাস পুকুর রয়েছে। পুকুরটি কয়েক বছর আগে সরকারিভাবে খনন করে ভূমিহীন মৎস্যজীবীদের ভোগদখলের জন্য দেয়া হয়েছে। এই পুকুরটি বনগ্রামে ফুলসাগর নামে সুপরিচিত। সম্প্রতি এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল ফুলসাগরের দখল নিয়েছে। তারা সেখানে বোমারু নামের ইঞ্জিন চালিত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে বিক্রয় করছে। ইতোমধ্যে তারা কয়েক লাখ টাকার বালু বিক্রয় করেছে।
কুলাঘাট স্কুলে শিক্ষক মো. ইদ্রিস আলী জানান, অপরিকল্পতভাবে পুকুরের বালু উত্তোলন করায় পরিবেশ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এমন কি সম্প্রতি মোগলহাট ও কুলাঘাটে পুকুরের ডুবে শিশুর মৃত্যুও হার বেড়ে গেছে। ১৫দিনের ব্যবধানে ৮টি শিশু মারা গেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যেসব পুকুর থেকে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হয়েছে। সেসব পুকুরে গোসল করতে নেমে শিশুরা মারা যাচ্ছে।
রেলওয়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছালাম জানান, পুকুর ও নদী থেকে পাথর, নুড়িপাথর ও বালু উত্তোলন করায় পানির নিচে ৩০-৪০ ফিট করে ব্লাকহোল্ড সৃষ্টি হয়েছে। এই সব ব্লাকহোল্ডে যারা সাঁতার জানে তারাও পানিতে ভেসে থাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এর ফলে পানিতে ডুবে শিশুরা মারা যায়। বনগ্রাম গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল রশিদ (৬০) (টাংরু মাহমুদ) জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রতিবাদ করায় এই বৃদ্ধ বয়সে ছেলে বয়সের ভূমি খেকোদের লেলিয়ে দেওয়া দুর্বত্তরা তাকে চড় থাপ্পর দিয়েছে। থানা পুলিশে অভিযোগ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা হয়রানি করে।
সুত্রঃ বাসস