কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ প্রতিদিন দিন বেরে চলছে রাজধানীর জনসংখ্যা। আর সচেতনতার অভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঢাকা শহরের দূষণ। পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য দূষণের একটি প্রধানতম কারণ।পলিথিন ও প্লাস্টিক এর ক্ষতিকর প্রভাবে মানবদেহে ক্যান্সার, চর্ম ও যৌনরোগ, বন্ধ্যাত্বসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়। নিষিদ্ধ হলেও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বাজার থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহার করছি পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য। বাজার থেকে পণ্য আনা-নেওয়া করছি পলিথিনের ব্যাগে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পলিথিনের কারণে পুরুষের টেস্টোস্টেরন এবং নারীর ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোন উৎপাদন কমে যায়। এর ফলে কমছে মানুষের যৌনক্ষমতা।
এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, পলিথিনে থাকে বিসফেনল-এ (বিপিএ) ও থ্যালেড। এ রাসায়নিকগুলোর প্রভাবে হাইপার থ্যাইরয়েডিজম গ্রন্থির হয়। ফলে মানবশরীরে উৎপন্ন অ্যান্টি এন্ড্রোজেন অর্থাৎ পুরুষ হরমোন তৈরির মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে পুরুষসুলভ বিষয়গুলোর বিকাশ কম ঘটে। এতে শুক্রাণু বা স্পার্মের উৎপাদন কমে যায় ফলে যৌনাঙ্গগুলো সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে না। অপরদিকে নারীদেহে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায়। ফলে যৌনাঙ্গের সঠিক বিকাশ হয় না। এতে নারীর সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। বন্ধ্যাত্বের ঘটনাও ঘটতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পলিথিন আমাদের পরিবেশের প্রচুর ক্ষতি করে। আমাদের দেহে ক্যান্সার তৈরি করতে যে সকল উপাদান ভূমিকা রাখে, তা পলিথিনের মধ্যে রয়েছে। এছাড়া চর্মরোগ, এলার্জি, শ্বাসকষ্টের অন্যতম কারণ পলিথিন পণ্য। হজম ও বিপাক প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে। আমরা ফ্রিজে মাছ, মাংসসহ অন্যান্য খাবার পলিথিন দিয়ে পেঁচিয়ে রাখি। এটি খুবই ক্ষতিকর। তিনি আরও বলেন, পলিথিন মাটিতে পঁচে না, ফলে মাটি ও মাটি থেকে উৎপাদন করা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া পলিথিনে মাছ ও মাংস প্যাকিং হলে অবায়বীয় ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করে। এতে এগুলো খুব তাড়াতাড়ি পঁচে যায়।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন শুধু ঢাকা শহরে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ পলিথিন একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া দেশে প্রতিদিন ৩০ লাখ টিস্যু পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। এগুলো প্রায় ১০০টি কোম্পানি উৎপাদন করে। ২০০২ সালে পলিথিন উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করা হয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে বলা হয়েছে যে, যদি কেউ নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন সামগ্রী উৎপাদন, আমদানি বা বাজারজাত করে তাহলে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।