কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ভেড়ার পশম থেকে শাল, স্যুটিং, কম্বল, পাপোস ইত্যাদি উৎপাদনে সাফল্য পেয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও ভেড়ার পশম থেকে আরো উন্নতমানের রপ্তানিযোগ্য বস্ত্র তৈরি এবং বাজারজাতকরণের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষ্যে কৃষি এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করার উদ্যোগও নিয়েছে মন্ত্রণালয়। খবর বাসস।
একইসাথে এ পণ্যের বাণিজ্যিক উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের যুক্তকরণসহ বাণিজমেলায় প্রদর্শনের ব্যবস্থাও করা হবে। এ লক্ষ্যে আগামী এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সাথে সভা করবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ভুক্ত প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের মধ্যে ২০১৪ সালে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতাস্মারকের ভিত্তিতে “সমাজভিত্তিক ও বাণিজ্যিক খামারে দেশীয়ভেড়ার উন্নয়ন ও সংরক্ষণ প্রকল্প” এর আওতায় ভেড়ার পশম, পাট ও সুতার মিশ্রণে সুতা তৈরির পর সেই সুতা থেকেই এসব মানসম্মত বস্ত্র তৈরি করা হয়েছে।
প্রাণী সম্পদ গবেষনা ইনিসস্টিউট এর মহা পরিচালক ড. তালুকদার নুরুন নাহার বলেন, গ্রামীন খামারীদের থেকে এই ভেড়ার পশম সংগ্রহ করা হয়। আগে তারা ভেড়ার এসব পশম ফেলে দিত। সনাতন পদ্ধতিতেই সেই পশম দিয়েই শাল, স্যুটিং, কম্বল, পাপোস তৈরী হতো। কিন্তু এগুলোর মান ভালো ছিলনা । তিনি বলেন, পরে পশম থেকে তৈরী এসব সামগ্রির মান কিভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাথে যোগাযোগ করে সমন্বিতভাবে কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়। গত বছর গবেষণার জন্য প্রতি কেজি একশ টাকা দরে এক টন ভেড়ার পশম খামারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। এখন পশম থেকে যে সামগ্রী উৎপাদিত হচ্ছে তার মান অনেক ভালো মসৃন এবং উন্নত।
মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রায় ৩৪লাখ ভেড়া থেকে বাৎসরিক প্রায় ৩০৬০ মে টন পশম উৎপাদিত হয়। এই পশমের দ্বারা শাল, স্যুটিং, কম্বল, পাপোস ইত্যাদি উৎপাদনে সফলতা পেয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।এক্ষেত্রে শালের উৎপাদনব্যয় হয়েছে ২৪৪ টাকা, স্যুটিং এর ২৫৮ টাকা এবং কম্বলপিচ ৪৯৫ টাকা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিঞ্জপ্তিতে আজ বলা হয়েছে, পরীক্ষমূলকভাবে প্রস্তুতকৃত এই পণ্যের নমুনা প্রধানমন্ত্রীর নিকট হস্তান্তরের সিদ্ধান্তও নিয়েছে এই মন্ত্রনালয়। আজ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ ছায়েদুল হক ও প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ ছাড়াও কৃষি এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এর বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মবকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তালুকদার নুরুন নাহার বলেন, বেড়ার পশম থেকে তৈরী সামগ্রী বাজারজাত করতে পারলে দেশের অর্থনীতিতে নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। একদিকে দেশের একটি বিরাট অংশের শীত নিবারন যেমন হবে, তেমনি পশমের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আরো বেশী করে ভেড়া চাষে আগ্রহী হবেন খামারীরা।
কৃপ্র/ তাহেরা ইসলাম/ এম ইসলাম