কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ গত তিন দিনে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারীর চরবাঘমারা গ্রামটি ব্রহ্মপুত্রের কড়ালগ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে। সোমবার ভোররাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ভাঙনের তাণ্ডবে হারিয়ে গেছে ৬০টি পরিবারের ভিটেমাটি, সহায়-সম্বল ও ভবিষ্যত স্বপ্ন। ভাঙনের মুখে রয়েছে বাঘমারা, পালেরচর, কান্দাপাড়া, কুটিরচর, ফুলুয়ারচরসহ অন্তত ১৫টি গ্রাম। এসব গ্রামের মানুষ তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে কেউ সরকারি সড়কে, অন্যের ভিটায়, এমনকি খোলা আকাশের নিচে মানবতর জীবনযাপন করছে। খবর নয়া দিগন্ত অনলাইন।
ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে রৌমারী উপজেলা শহরটি। নদী থেকে ২ কিলোমিটার দূরে উপজেলার অবস্থান। অন্যদিকে বলদমারা, বাইশপাড়া, খেদাইমারি, ঘুঘুমারি, খেরুয়ারচর, সাহেবের আলগা গ্রামগুলোতেও দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙন।
ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে চলছে মানুষের আহাজারি। হাতে কাজ না থাকায় তাদের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
ভাঙন কবলিত চরবাঘমারা গ্রামের জুলহাস আলী, আব্দুল কাদের, জাদের আলী, আশরাফ আলী, আব্দুল আলিম, আমির হামজাসহ অনেকে জানান, ‘সোমবার ভোররাত থেকে আচমকা ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন দেখা দেয়। আমরা অনেকেই ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে সময় পাইনি। ফলে ৬০টিরও অধিক মানুষের ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে। কোনো রকমে জীবনটা নিয়ে পালিয়ে বেঁচেছি। এরমধ্যেও ভেসে গেছে কিছু গরু বাচুর, ধানের ডোল, বিছানাসহ অনেক আসবাবপত্র।’
চরবাঘমারা গ্রামের ষাটোর্ধ গোলবানু বেওয়া বলেন, ‘এমুন নদী ভাঙন বাপের জন্মেও দেহি নাই বাপু। আমার ৮ পোলাই কিছুই নিতে পারে নাই। অনেক রাত্রিরে কোন রহমে ছোট ছোট নাতি-নাতনি গো লইয়া ভাইগা আইছি। এহন মানসের বাইত্তে থাহি। খাওন নাই, থাহনের জায়গা নাই। এমনি কইরা কয়দিন যে চলবো ক্যারা জানে। আপনেরা আমাগো জন্যি কিছু এডা করেন। নইলে বাঁচুম ক্যামনে?’
গত কয়েক দিন ধরে এমন ব্যাপক ভাঙন চললেও প্রশাসনের কোন তৎপরতা দেখাযায়নি। এব্যাপারে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এবিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সরেজমিন প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হবে।