কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মাছে ভাতে বাঙ্গালী, বাংলার চিরাচরিত প্রবাদ। শুনলে অবাক লাগবে যে, বাংলাদেশের মানুষের ভাত খাওয়ার পরিমাণ কমছে। বাড়ছে মাছ, সবজি, আলু ও ফল খাওয়ার পরিমাণ। ২০২০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে ভাত খাওয়ার পরিমাণ আরও কমবে। ফলে বর্তমানে দেশে যে পরিমাণে চাল উৎপাদিত হয়, তার চেয়ে উৎপাদন সামান্য বাড়লেই ২০৫০ সালের মধ্যে চালের চাহিদার কোনো ঘাটতি হবে না।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সুভাষ দাশগুপ্তের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
শনিবার বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল জার্নালিস্টস অ্যান্ড অ্যাকটিভিস্টস ফেডারেশন (বিএজেএএফ) আয়োজিত ‘এশিয়ার চাল উৎপাদন ও বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। রাজধানীর খামারবাড়ির আ কা মু গিয়াসউদ্দিন মিল্কী মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সুভাষ দাশগুপ্ত বলেন, ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে চাল উৎপাদন হবে ৪ কোটি ২৫ লাখ টন। আর ২০৫০ সালে তা হবে ৪ কোটি ৫৫ লাখ টন। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিদিন মাথাপিছু ৪৩৮ গ্রাম করে চাল খায়। ২০৫০ সালে খাবে ৪০৫ গ্রাম করে। ফলে ওই সময়ে জনসংখ্যা ২০ কোটি ২০ লাখ হলেও ৪ কোটি ৫৫ লাখ টন চাল দিয়ে চাহিদা মেটানো যাবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, আজকে চালের উৎপাদন বেড়েছে। কারণ আওয়ামী লীগের ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের শাসনামলে হাইব্রিড জাতের ফসল চাষের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনের খাদ্য চাহিদা মেটাতে কৌলিকভাবে পরিবর্তিত ফসলের জাত (জিএম) চাষের দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে।
কৃষি খাতের বড় হুমকি হিসেবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন ও জনসংখ্যার চাপ সামনে আসছে বলে মত দেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এসব সমস্যা মোকাবিলা করেই আমাদের কৃষক খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়ে যাচ্ছেন। সরকার কৃষকদের ভর্তুকি ও প্রণোদনা দিয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক খান আহমেদ সাঈদ মুরশিদ দেশের ধান উৎপাদনের ধারা বজায় রাখতে হলে কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল কৃষি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে ইতিবাচক হিসেবে দেখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘কোনো সংবাদ নেতিবাচক নয়। সাংবাদিকেরা ভুল করে ভুল তথ্য পরিবেশন করতে পারেন। কিন্তু তাই বলে তাঁদের সঙ্গে আর কথা বলা যাবে না। এই আচরণ ঠিক না।
কৃপ্র/ তাহেরা ইসলাম/ এম ইসলাম