কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আফ্রিকার দেশ ঘানায় রয়েছে ৮০টি প্রজাতির ব্যাঙ। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, উভচর এই প্রাণীরা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু একজন মানুষ তাদের বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন৷
ব্যাঙের ‘ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ’ আপনার মনে বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে, কিন্তু মানুষের জীবনে এদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ ব্যাঙ বড় বড় পোকামাকড় খেয়ে ফেলে, বিশেষ করে ম্যালেরিয়ার বিস্তার ঘটায় এমন মশাও খেয়ে ফেলে৷ অন্যান্য রোগ ছড়ায় এমন পোকামাকড়ও তাদের প্রধান খাদ্য৷ কিন্তু ঘানার বেশিরভাগ মানুষই এই ব্যাঙদের ভূমিকাটা উপলব্ধি করতে পারে না৷ তারা বুঝতেই পারে না, তাদের কিছু আচরণ ব্যাঙের জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷
তাই ব্যাঙ রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন গিলবার্ট অ্যাডাম৷ ৪০ বছর বয়সি এই ব্যক্তি বললেন, ‘‘ব্যাঙ ও উভচর প্রাণীদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে৷ তাদের ৪৩ ভাগ এখন বিলুপ্তির পথে এবং আগামী এক শতকেই হয়ত তারা বিলুপ্ত হয়ে যাবে৷
গিলবার্ট এবং তার সহযোগীরা প্রধানত তিনটি বিশেষ প্রজাতি নিয়ে কাজ করছেন, যেগুলো ঘানা থেকে খুব শিগগিরই বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ স্থানীয় অরণ্যে তারা এ ধরনের ব্যাঙ খুঁজে বেড়ান৷ অ্যাডাম জানালেন, ‘‘আমরা যখন এই প্রজাতির ব্যাঙ খুঁজে পাই, তখন তাদের বাস্তুসংস্থান সংক্রান্ত প্রয়োজনটা বুঝতে চেষ্টা করি৷
লাল-চোখ এদের৷ নাম ডুলেমানোহিলা৷ এ ধরণের ব্যাঙ এখন উভচর (অ্যাম্ফিবিয়ান) প্রাণীদের ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে চলার উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত৷ নিশাচর এই প্রাণীদের এক সময় ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যেতো কোস্টারিকা এবং পানামায়৷ এখন থাকার জায়গা কমছে, ছত্রাকজনিত বিশেষ ধরণের ভয়াবহ রোগও হানা দিচ্ছে৷ ফলে লাল-চোখা ব্যাঙেরাও এখন বিলুপ্তির পথে৷সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ১৬৫টি প্রজাতির ব্যাঙ পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে৷ আমরা স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের বুঝাই যে এ ধরনের ব্যাঙগুলোকে রক্ষা করতে হবে৷
অ্যাডাম আরো জানালেন, ‘‘আমরা অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছি স্থানীয় মানুষ যাতে ব্যাঙদের গুরুত্বটা বোঝে, কিন্তু সেটার জন্য আমাদের অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হচ্ছে৷ আর একটা সমস্যা হলো, ফান্ড বা তহবিলের অভাব৷ ঘানায় ৮০ প্রজাতির ব্যাঙ রয়েছে৷ আমরা এখন তিনটি প্রজাতি রক্ষায় কাজ করছি, কিন্তু তহবিলের অভাবে কাজটা ঠিকমতো এগোচ্ছে না৷
এই ব্যাঙদের রক্ষায় প্রথমেই স্থানীয়দের শিক্ষার প্রতি জোর দিলেন অ্যাডাম৷ বললেন, আমি শিশুদের এ বিষয়ে শিক্ষিত করে তুলতে চাই৷ তারা প্রকৃত শিক্ষা পেলে ভবিষ্যতে আমাদের দায়িত্বটা তাদের কাধে তুলে দেয়া যাবে৷
কৃপ্র/ এম ইসলাম