কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বাগেরহাট জেলার আশিভাগ মাছের ঘের ও পুকুর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। কমপক্ষে দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হাজার হাজার মৎস্য চাষী অপূরণীয় ক্ষতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ঋণ ও দাদনগ্রস্ত এসব চাষীরা হাপিত্যেশ করছেন। গত পূর্ণিমার গোনে (তিথিতে) অস্বাভাবিক জোয়ার ও প্রবল বৃষ্টিতে চিংড়ি ও মৎস্য চাষ প্রধান এ জেলার অধিকাংশ মাছের খামার ভেসে যায়।
জেলা চিংড়ি চাষী সমিতির আহ্বায়ক ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন জানান, ভারিবর্ষণ ও জোয়ারে জেলার প্রায় সব মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য চাষীরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ব্যাংক বা এনজিও থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তারা মাছ চাষ করে এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন। এ অবস্থায় দেশান্তরী ও আত্মহত্যা ঠেকাতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের দ্রুত আর্থিক সহায়তা করতে সরকারের কাছে তিনি দাবি জানিয়েছেন।
চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, কচুয়া ও সদর উপজেলার শতশত মৎস্য চাষী জানান, তাদের লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে যাওয়ায় তারা জীবিকার সঙ্কটে পড়েছেন। মৎস্য চাষী রুস্তম হলদারের ভাষায়, এখন বেঁচে থাকাই মুশকিল। সরেজমিনে ফকিরহাটের নলধা-মৌভোগ, বাহিরদিয়া, শুভদিয়া, চিতলমারীর রায়গ্রাম, খড়িয়া, মোল্লাহাটের কোদালিয়া-কেন্দুয়া, কচুয়ার বাধাল, মসনিসহ বহু ইউনিয়নে গ্রামের পর গ্রাম গত ৬ দিনেও জলাবদ্ধ হয়ে আছে।
স্লুইস গেটগুলো দিয়ে ঠিকমত পানি ওঠা-নামা না করা, সরকারী খালগুলো ভরাট ও দখল হওয়া এবং পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না। ফলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল অদুদ জানান, দেশের অন্যতম প্রধান চিংড়ি উৎপাদনকারী জেলা বাগেরহাট। অস্বাভাবিক জোয়ার এবং টানা বর্ষণে এ জেলার রামপাল উপজেলায় ৭০ ভাগ, মোল্লাহাটে ৯০ ভাগ, কচুয়াতে ৮০ ভাগ, ফকিরহাটে ৭০ ভাগ, চিতলমারীতে ৭০ ভাগ, মোরেলগঞ্জে ৭০ ভাগ, মংলাতে ৮০ ভাগ ও সদর উপজেলায় ৮০ ভাগ মাছের ঘের ভেসে গেছে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম