কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ এবার খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় পাটের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষক ও শ্রমিক বান্ধব বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর খুলনা-যশোর অঞ্চলে বন্ধ থাকা জুটমিল-কলকারখানা চালু হওয়ায় পাটের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা বেশি জমিতে পাট চাষ করছেন বলে জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ২১ লাখ ৩৩ হাজার ২০৪ বেল পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। জেলাগুলো হচ্ছে-যশোর, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা।
জেলাওয়ারি পাটের চাষ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে- যশোরে ২৪ হাজার ৬৪৭ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৭০ হাজার ৭২৫ বেল পাট, নড়াইলে ২০ হাজার ৩৬৯ হেক্টরে ২ লাখ ২৫ হাজার ৭৭ বেল, ঝিনাইদহে ২০ হাজার ৪৭০ হেক্টরে ২লাখ ২৬ হাজার ১৯৪ বেল, মাগুরায় ৩৩ হাজার ৫৯০ হেক্টরে ৩ লাখ ৭১ হাজার ১৯০ বেল, কুষ্টিয়ায় ৩৭ হাজার ৫২০ হেক্টরে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৬ বেল, চুয়াডাঙ্গায় ১৮ হাজার ৫৭০ হেক্টরে ২লাখ ৫ হাজার ১৯৯ বেল, মেহেরপুরে ২৩ হাজার ৭২৫ হেক্টরে ২লাখ ৬২ হাজার ১৬১ বেল, সাতক্ষীরায় ১০ হাজার ৬৮৪ হেক্টরে ১লাখ ১৮ হাজার ৫৮ বেল, বাগেরহাটে ১ হাজার ৪৩২ হেক্টরে ১৫ হাজার ৮২৪ বেল এবং খুলনা জেলায় ২ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে ২৪ হাজার ২শ’ বেল পাট।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ আমিনুল হক বলেন, সোনালী আঁশ নামে খ্যাত পাট একটি সহজলভ্য অর্থকরী কৃষি ফসল। পাট চাষে কৃষকদের তেমন কোন খরচ নেই এবং কোন ধরনের ঝামেলাও পোহাতে হয় না। পাট বীজ বপনের পর আগাছা তুলে ফেলা ছাড়া তেমন কোন কাজ নেই। পাটের মূল্য প্রতিবছর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এই ফসল চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। যশোর-খুলনাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার জুট মিলে উৎপাদিত পাটের ব্যাগ, সুতা ও কার্পেটের রয়েছে দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা। তাছাড়া পাটখড়িরও রয়েছে চাহিদা। জ¦ালানিসহ নানা কাজে পাট খড়ির ব্যবহার হয়ে থাকে। যে কারণে প্রতিবছর এ অঞ্চলে পাটের চাষ বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ অঞ্চলে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে তিনি জানান।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামের পাট চাষি আব্দুল হান্নান সরদার বাসসকে বলেন, পাট উৎপাদনে কৃষকদের তেমন বেগ পেতে হয়না। জমির সামান্য পরিচর্যা করলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়।পাট চাষে তেমন কোন ওষুধের প্রয়োজন পড়েনা। বিগত ৫/৬ বছর ধরে পাটের ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছেন। যে কারণে তাঁর মধ্যে পাট চাষের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।
নড়াইল সদর উপজেলার জুড়ুলিয়া গ্রামের পাটচাষি হায়দার আলী ভূইয়া জানান, জমি থেকে পাট কাটার পর পানিতে পচানো শেষে পাটখড়ি থেকে তা বাছাই কাজও শেষের পথে। আগামি ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে কৃষকের ঘরে পুরোপুরি পাট উঠে যাবে।এবছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট জাগে (পানিতে পচানো) তেমন কোন সমস্যা হয়নি এবং পাটের দামও ভালো বলে তিনি জানান।
কৃপ্র/ এম ইসলাম