‘সিনোহাইড্রো করপোরেশন দ্রুত বালু রাখার জায়গা চেয়েছে’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ভরা বর্ষা ও বালু ফেলার জায়গা ঠিক করতে সময়ক্ষেপণের কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদীশাসনের কাজে গতি কিছুটা কম। এর জন্য প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়বে। তবে কাজের গতিতে কিছুটা ছেদ ও বাড়তি ব্যয় প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা হবে না বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্র জানায়, গত মাস পর্যন্ত নদীশাসনের কাজের অগ্রগতি ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। শুধু গত মাসে অগ্রগতি ১ শতাংশের কম। অন্যদিকে মূল সেতুর অগ্রগতি ২৮ শতাংশ। নদীশাসনের অংশ হিসেবে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা এবং সিমেন্টের ব্লক তৈরি করা হচ্ছে। খবর প্রথম আলো অনলাইনের।
পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটার এলাকা নদীশাসন করা হবে। নদী খনন, তলদেশে স্লোপ তৈরি ও পাড় বাঁধাই হচ্ছে নদীশাসনের মূল কাজ। এর একদিকে বালু কেটে তা উত্তোলন করতে হবে। আবার বালুভর্তি বস্তা ফেলে স্লোপও তৈরি করতে হবে। পাড় বাঁধাই ও অন্য কাজে ব্যবহার করা হবে ব্লক ও পাথর। নদীশাসনের কাজে পৌনে দুই কোটি ব্লক তৈরি করতে হবে। এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ ব্লক তৈরি করা হয়েছে। নতুন ব্লক তৈরি করে রাখার জায়গা না থাকার কারণে এখন ব্লক তৈরি বন্ধ আছে।
নদীতে তিনটি ড্রেজার আছে বালু তোলার জন্য। তবে সব কটি কাজ করতে পারছে না। কারণ, বালু ফেলার জায়গা নেই। পদ্মা সেতুর নদীশাসনের অংশ হিসেবে ২৫০ কোটি ঘনফুট বালু নদী থেকে তোলা হবে। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে নদীর তিন কিলোমিটারের মধ্যে তাদের বালু ফেলার জায়গা দিতে হবে।
সূত্র জানায়, বালু ফেলার জন্য মাদারীপুর অংশের চরে ২ হাজার ৪০০ একর জমি চিহ্নিত করে সিআইজিএস নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। তারা সমীক্ষা করে দেখেছে, চরের মধ্যে কিছু জমিতে স্থানীয় লোকজন চাষাবাদ করেন। আর কিছু জলাশয় আছে, যেগুলো বর্ষায় ডুবে যায় আর শুষ্ক মৌসুমে অল্প পানি থাকে। তারা এসব জমিতে এমনভাবে বালু ফেলার পরামর্শ দেয়, যাতে তা বিদ্যমান চরের চেয়ে বেশি উঁচু না হয়। এতে বর্ষা মৌসুমে বালু ফেলার স্থানগুলো ডুবে যাবে এবং এতে পলি জমে চাষের জন্য ভালো হবে।
এই পরামর্শ মেনে সেতু বিভাগ মাদারীপুরের জেলা প্রশাসনকে উত্তর চর জানাজাত, মাতবরের চর, পূর্ব খাসবন্দর খোলা, কাঁঠালবাড়ি, দক্ষিণ চর জানাজাত, চরচন্দ্রা, মাগুরখন্দ, শাহবাজনগর, কালিপাড়া এলাকায় প্রায় ১ হাজার ২০০ একর জমি ইজারা নেওয়ার চাহিদা দেয়। কিন্তু স্থানীয় মানুষের বাধার মুখে জেলা প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। এখন সেতু বিভাগ এসব জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনকে চাহিদা দিয়েছে। এসব জমি অধিগ্রহণে কত টাকা লাগবে, সেই হিসাব এখনো দেয়নি জেলা প্রশাসন। তবে তা কয়েক শ কোটি টাকা হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে নদীশাসনের দায়িত্ব পাওয়া চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন দ্রুত বালু রাখার জায়গা চেয়েছে। তাদের ড্রেজার অলস বসে আছে জানিয়ে বারবার বৈঠকে তাগাদা দিচ্ছে। সূত্র জানায়, মাওয়া প্রান্তে এখন আর নদীশাসনের কাজ হচ্ছে না। জাজিরা প্রান্তে ড্রেজার দিয়ে নদীর বালু তোলার কাজ চলছে। মাওয়ায় কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছের বিচরণের সময়। ড্রেজিংসহ নদীশাসনের কাজ অব্যাহত রাখলে ইলিশের বিচরণ বাধাগ্রস্ত হবে। তা ছাড়া নদীতে এ সময় স্রোতও বেশি, যে কারণে কাজ করা কঠিন।
জানতে চাইলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, পুরো প্রকল্পের কাজে শুকনো ও বর্ষা মৌসুমের জন্য আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। বর্ষাকালের পরিকল্পনা ঠিকমতোই এগোচ্ছে। শুকনো মৌসুমে হয়তো কাজ আরও বেড়ে যাবে। জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ইজারা নিয়ে বালু ফেলতে পারলে আরও ভালো হতো। তবে জমি অধিগ্রহণ করে বালু ফেলা হলে আরও সুবিধা। তখন ওই জমি অন্য উন্নয়নকাজে লাগানো যাবে্লা
কৃপ্র/ এম ইসলাম