কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভার ও আশুলিয়ায় বিভিন্ন এলাকায় এবার পশুর অন্তত ১৫টি অনুমোদনহীন হাট বসেছে। জেলা, উপজেলা প্রশাসনসহ পুলিশ এসব অবৈধ হাট উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উপজেলা প্রশাসন বলছে, হাট উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, পুলিশ বলছে, উপজেলা প্রশাসনের এমন কোনো নির্দেশনা তারা পায়নি। খবর প্রথম আলো অনলাইনের,
গত শুক্র ও গতকাল শনিবার সরেজমিনে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর বটতলা, ধামসোনা ইউনিয়নের বগাবাড়ির বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ডেন্ডাবর, ঘোড়াপীরের মাঝারসংলগ্ন আলহাজ জাফর ব্যাপারী উচ্চবিদ্যালয় মাঠ, বাইপাইল মণ্ডলপাড়া ও শ্রীপুর বালুর মাঠ, আশুলিয়া ইউনিয়নের চারাবাগ, কাঠগড়া, কুটুরিয়া ও আশুলিয়া বাজার, শিমুলিয়া ইউনিয়নের গোয়ালবাড়ি বাজার, পাড়াগ্রাম ও টেঙ্গুরী এবং সাভারের নন্দখালী এলাকায় কোরবানির পশুর হাট বসতে দেখা যায়। অনুমোদন না থাকায় সরকার এসব হাট থেকে কোনো রাজস্ব পাবে না। কিন্তু হাটের আয়োজকেরা ঠিকই ক্রেতাদের কাছ থেকে শতকরা পাঁচ টাকা হাসিল আদায় করছেন।
আশুলিয়া থানা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বগাবাড়ির বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় শুক্রবার থেকে পশুর অবৈধ হাট বসিয়েছেন আশুলিয়া থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুনসুর আলম মাদবর। ঘরবাড়ির আনাচকানাচে বসানো ওই হাটের কারণে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে তাঁদের চলাচলের একমাত্র সড়কটিও বন্ধ হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী কয়েক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, আশুলিয়া থানা ও উপজেলা প্রশাসনকে এসব সমস্যার কথা জানিয়ে পশুর অবৈধ ওই হাট বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে কারও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
মুনসুর আলম মাদবর বলেন, এবার জেলা প্রশাসন থেকে সাভারে কোরবানির পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এ কারণে অনুমোদন ছাড়াই হাট বসানো হয়েছে।
শিমুলিয়ার পাড়াগ্রাম এলাকায় অবৈধভাবে হাট বসিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ বি এম আজাহারুল ইসলাম। ওই এলাকার কিছু দূরে গোয়ালবাড়ি বাজারে আরও একটি পশুর হাট বসেছে। সেই হাটেরও কোনো অনুমোদন নেই। আজাহারুল ইসলাম বলেন, এলাকায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। এ কারণে অনুমোদন না মিললেও হাট বসানো হয়েছে।
নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়ক থেকে ১০০ গজ দূরে শ্রীপুর এলাকায় হাট বসানো হয়েছে ফারুকনগর ইসমাইল ব্যাপারী উচ্চবিদ্যালয়ের নামে। বিদ্যালয়ের পাশে একটি বালুর মাঠে গতকাল পর্যন্ত হাজার খানেক গরু উঠেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য কয়েক বছর ধরে এখানে হাট বসানো হয়। প্রতিবছরই জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নেওয়া হয়। কিন্তু এ বছর অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
একইভাবে আশুলিয়ার ঘোড়াপীরের মাঝার এলাকায় আলহাজ জাফর ব্যাপারী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বসেছে পশুর অবৈধ হাট। বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নাম করে প্রতিবছর এখানে হাট বসানো হলেও মূলত আয়ের প্রায় পুরোটাই যায় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পকেটে।
সাভার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুল হাসান বলেন, এবার সাভার আশুলিয়ায় পশুর হাটের কোনো অনুমোদন নেই। এরপরও জেলা বা উপজেলা প্রশাসন থেকে এগুলো উচ্ছেদে কোনো নির্দেশনা আসেনি।
তবে সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, ‘অবৈধ হাট উচ্ছেদে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, পশুর অবৈধ হাট উচ্ছেদে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়া গেলেই অভিযান শুরু হবে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম