কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে নিষেধাজ্ঞার আগেই বিপুল পরিমাণ মা (ডিমওয়ালা) ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে ইলিশের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ৫ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মাকসুদুল হাসান খানের সই করা আদেশে বলা হয়, আশ্বিন মাসের প্রথম পূর্ণিমার দিন, এর আগে ৪ দিন, পরের ১৭ দিনসহ ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ সময়ে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা, মজুত, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ থাকবে। আইন অমান্য করা হলে জেল, জরিমানাসহ উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার আগেই এক মাস ধরে পটুয়াখালীর সাগর মোহনা ও সংলগ্ন নদীগুলোতে জেলেদের জালে বিপুল পরিমাণ মা ইলিশ ধরা পড়ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় নির্দিষ্ট সময়ে শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জেলায় ইলিশের উৎপাদন ছিল ১৫ হাজার ৪১৯ মেট্রিক টন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ২৮ হাজার ২৭৭ মেট্রিক টন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা আরও বেড়ে উৎপাদন হয় ৩২ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। এরপরও ব্যাপক হারে মা ইলিশ প্রজননের জন্য উজানে চলে আসে। সেই বিবেচনা থেকে এ বছর ২২ দিন ইলিশ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন সুলতান মাহমুদ বলেন, বৈশ্বিক পরিবর্তন, জলবায়ুর প্রভাব ও আবহাওয়াজনিত কারণে ইলিশ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রজননক্ষম হয়ে ডিম ছাড়তে উজানে চলে আসে এবং জেলেদের জালে ধরা পড়ে। এ কারণে ইলিশের উৎপাদনে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে। তাই ভবিষ্যতে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে ইলিশ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ করা উচিত।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান বলেন, এখন কিছু ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে সব মা ইলিশই পরিপুষ্ট ও পরিপক্ব হয়নি। মা ইলিশ ধরা পড়ায় উৎপাদনে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে।
কৃপ্র/ কে আহমেদ/ এম ইসলাম