কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বরেন্দ্র ভূমিসহ রাজশাহী অঞ্চলের রোপা আমন চাষীদের কাছে পরিবেশ বান্ধব ‘সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ’ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর জেলায় পরিবেশ বান্ধব এই পদ্ধতি বিষাক্ত কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার পরিবেশের ভারসাম্য ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। এর বিকল্প হিসেবে এই পদ্ধতির ব্যবহার আশির্বাদ হিসেবে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা।
উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন ফসল ও সবজি ক্ষেতে আনুপাতিক হারে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করা এবং বারবার কীটনাশকের ব্যবহারে জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে।
প্রতি তিন ডেসিমেল সবজির জমির জন্য একটি ফাঁদ প্রয়োজন। প্রতি বিঘায় ১১টি ফাঁদ ব্যবহার করতে হয়। বর্তমানে ফাঁদ তৈরিতে ব্যবহৃত একটি ক্যাপসুল ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং এটা তিন মাসের জন্য কাযৃকর, পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মঞ্জুর মাওলা এ কথা জানান।
রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ি, দুর্গাপুর পুঠিয়া এবং চরঘাট উপজেলার এবং নাটোরে লালপুর, বরাইগ্রাম ও সিংরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অনেক কৃষকরা তাদের রোপা আমন ক্ষেতে এই ফাঁদ স্থাপন করেছেন।
পবা উপজেলার দারুশা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (৪৫) জানান, ‘আমি এক বিঘা টমোটোর জমিতে সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ’ ব্যবহারে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রক করে সন্তোষজনক ফলন পেয়েছি। জনগণ কীটনাশক মুক্ত এসব সবজি একটু বেশী দামে ক্রয় করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।’ কাকনহাটের শাপলা বীজ ভান্ডারের মালিক আব্দুর রহিম বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১০ হাজার ক্যাপসুল বিক্রি করেছি। কৃষকরা সবজির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তাদের জমিতে ‘সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ’ ব্যবহার করছে।’
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকদের মাঝে এই পদ্ধতি জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে বিভিন্ন গ্রামের জমি প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়েছে।
সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ লাউ, আম, লিচু, শাক-সবজি ও ফলমূলকে কীট-পতঙ্গের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সফল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া ফসলের জমিতে বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে না।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক (কৃষি) এটিএম রফিকুল ইসলাম জমির উৎপাদনশীলতা বজায় রাখার জন্য কৃষকদের মাঝে এই পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/ এম ইসলাম