কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজশাহী জেলার বরেন্দ্র অঞ্চল জুড়ে এবার আমন চাষের শুরু থেকেই পোকা দমনে নানা পদ্ধতি ব্যবহার করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। এ অঞ্চলের আমনের লক্ষ্যমাত্রার এক তৃতীয়াংশই এবার পার্চিং, লগ লাইন পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। কিন্তু আমনের মাঝামাঝি সময় এসে হঠাত্ করে ক্ষেতে (ব্যাকটেরিয়াল লিপ ব্লাইথ) পাতা মরা রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে।খবর ইত্তেফাক অনলাইনের।
ক্ষেতের এ দুরবস্থা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন অনেকেই। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা স্বর্ণা জাতের ধানকে এ রোগের অন্যতম হিসেবে দায়ী করছেন। উপজেলার প্রায় ৭৫ ভাগ কৃষক এবার স্বর্ণা জাতের ধান চাষাবাদ করেছেন। আমন ক্ষেতে পার্চিং, লগ লাইন পদ্ধতিতে চাষাবাদ হলেও অনেক জমিতে (ব্যাকটেরিয়াল লিপ ব্লাইথ) পাতা মরা রোগের প্রাদুর্ভাবে ক্ষেতের অনেক ধানের আগা পুড়ে লাল হয়ে গেছে।
কৃষকরা জানান, ক্ষেতে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না। উপজেলা কৃষ্ণপুর গ্রামের আদর্শ কৃষক আলহাজ সামসুদ্দিন মন্ডল জানান, চলতি মৌসুমে ৪২ বিঘা জমিতে স্বর্ণা জাতের ধান চাষাবাদ করেছেন। শুরুর দিকে ভালো থাকলেও মাঝামাঝি সময় এসে তার সাত থেকে ১২ বিঘা জমিতে ধানের আগা মরে গেছে। বিভিন্ন রকম কীটনাশক ব্যবহার করেও সুফল পাচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, এ পাতা মরা (ব্যাকটেরিয়াল লিপ ব্লাইথ) রোগের প্রভাবে ধানের খুব একটা ক্ষতি হবে না। সেই সঙ্গে ফলনও খুব একটা কম হবে না। কৃষকদের বেশি করে পটাশ ব্যবহার ও ক্ষেতে শুকান দিলেই ক্ষেতের ধান ঠিক হয়ে যাবে। তবে স্বর্ণা জাতের ধানে বেশি এ রোগ আক্রমণ করে। তাই স্বর্ণা জাতের ধান বাদ দিয়ে অন্য কোনো জাতের ধান চাষাবাদ করলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
জয়পুরহাট কালাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠে শত-শত বিঘা আমন ধান ক্ষেতে পাতাব্লাস্ট রোগে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। প্রতিরোধে কীটনাশক প্রয়োগ করেও আক্রমণ কমছে না। এতে কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে সঠিক সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন ধান ক্ষেতে পাতাব্লাষ্ট রোগ ব্যাপকহারে দেখা দিয়েছে। এ রোগের ফলে ধানের সবুজ পাতাগুলো ধীরে ধীরে হলুদ বর্ণ ও সরু হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।
কৃষকরা প্রতিষেধক ছিটিয়ে কাজ না হওয়ায় আমন ধান ক্ষেত নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এই দুঃসময়ে কৃষি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় ক্ষুব্ধ হয়েছে উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল ইসলাম বলেন, এবার উপজেলাতে ১৩ হাজার ছয়শ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। তবে, বিভিন্ন মাঠে কিছু জায়গায় ধান ক্ষেতে পাতাব্লাষ্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এতে কৃষকের ভয়ের কোনো কারণ নেই। আক্রান্ত জমিতে সঠিক সময়ে নাটিভো ১০ লিটার পানিতে ছয় গ্রাম পাউডার মিশিয়ে এবং ফিলিয়া ১০ লিটার পানিতে ২০ মি.লি. ওষুধ ছিটিয়ে দিলে সুফল পাওয়া যাবে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম