কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মাধবডাঙ্গা গ্রামের এক বাড়ি ভর্তি পাখি। দেশ-বিদেশ থেকে পাখিরা এসে এখানে আশ্রয় নিচ্ছে। আর তা দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত মানুষ। মাধবডাঙ্গা বগুড়ার ধুনট উপজেলার একটি গ্রাম। শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে যমুনার পাড়ে এই আস্তানা।
এ আস্তানা-বাড়ির মালিক ভুটান সরকার নামে এক ব্যক্তি। সরেজমিনে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ গাছপালায় ঘেরা ভুটান সরকারের বাড়ি। ডালে ডালে শুধু পাখি। পাখিতে সবুজ গাছ কালো, সাদা আর নানা রঙের বর্ণ ধারণ করেছে। আর এই দৃশ্য দেখতে ভিড় করে আছে বহু মানুষ।
ভুটান সরকারের বাড়ি আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার পাখি। বাড়িটি বেশ পুরনো ও বড়। বয়স্ক গাছপালায় ভর্তি। এতে আশ্রয় নেওয়া দেশি জাতের পাখির মধ্যে রয়েছে দোয়েল, টিয়া, সারস, মাছরাঙা, কাঠঠোকরা, পানকৌড়ি, কানা বক, সাদা বক, ডাহুকসহ নানান পাখি। আছে বিদেশি পাখিও। বেশির ভাগ পাখি শীত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে এসে আশ্রয় নেয়।
গ্রীষ্মের ছয় মাস পাখিগুলো এখানে থাকে। তবে এ ছয় মাসে পাখিগুলো ডিম দেয়, বাচ্চা ফোটায়। তারপর শীত আসার আগেই চলে যায়। শীত শেষ হলে আবার ফিরে আসে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে কাউকে পাখি মারতে দেওয়া হয় না। তাই পাখিরা এ স্থানকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে। তারা জানান, হাজার হাজার পাখির আগমন ঘটে এই গ্রামে। সকালে পাখির কলকাকলিতে ঘুম ভাঙে সবার। পাখিগুলো যমুনাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। খাবার সংগ্রহের পর আবার ফিরে আসে।
ডালে ডালে এদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত থাকে গ্রাম। পাখি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থী। এক দর্শনার্থী সুরুজ আলী জানান, তিনি বগুড়া সদর উপজেলা থেকে পাখি দেখতে এসেছেন। পাখির গল্প শুনেই পাখি দেখতে এসেছেন। আরেক দর্শক মিজানুর রহমান জানান, তিনি ঢাকায় চাকরি করেন। শত শত পাখি দেখে তিনি মুগ্ধ। বাড়ির মালিক ভুটান সরকার জানান, শীত শেষ হওয়ার পরপরই পাখি আসতে থাকে।
প্রতি বছর ৩-৪ হাজার দেশি প্রজাতির পাখি আসে। কাউকে পাখি শিকার করতে দেওয়া হয় না। তাই এ জায়গাকে পাখিরা নিরাপদ মনে করে। প্রতি বছরই পাখির সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দর্শনার্থীও। তিনি বলেন, খুব ভালো লাগে যখন কেউ পাখিগুলো দেখতে আসে। ঈদে পাখি দেখার জন্য ভিড় বেশি হয়। সকালে পাখিরা খাবার সংগ্রহে চলে যায়।
গ্রীষ্মের ছয় মাস পাখিগুলো বাচ্চা ফোটানোর পর বাচ্চাগুলো নিয়ে শীতের সময় চলে যায় অজানা কোথাও। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে পাখিগুলো এভাবে আসা-যাওয়া করছে।
সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন / কৃপ্র/ এম ইসলাম