কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইকোপার্কটিতে গত আড়াই মাস যাবৎ প্রাণীদের খাবার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । ফলে সেখানের প্রাণী গুলো ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে । স্থানীয়রা জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এলাকা বাসিদের সহযোগিতা স্বল্প খাবার দিয়ে প্রাণীগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন । সরকারি ভাবে অর্থ বরাদ্দ ও সময়মত ঠিকাদার নিয়োগ না দেওয়াতেই এ সংকট দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
তারা আরো জানান ‘ইকো-ট্যুরিজমের সুযোগ বৃদ্ধি’ প্রকল্পের আওতায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সুন্দরবনের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বন টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সখিনা অরণ্যে ২০১১-১২ অর্থবছরে সোনাকাটা ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করে। পার্কে ১৪টি হরিণ, ৩ টি মেছো বাঘ, ২টি কুমির, শতাধিক বানর, ২টি শজারু, ২৫টি শূকর, ২৫টি অজগরসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী রয়েছে।
স্থানীয় বন কর্মকর্তারা বলেন, প্রতিদিন কুমিরের খাবারের জন্য ১ দশমিক ২৫ এবং মেছো বাঘের জন্য ৫ কেজি মুরগির মাংস, হরিণের জন্য ২৫ কেজি মিষ্টিকুমড়া ও আলু, শূকরের জন্য ৬৩ কেজি ভাত, কুঁড়া, ডালের ভুসি ও কচু দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এতে দৈনিক ব্যয় হয় প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকা। সরকারের নির্ধারিত ঠিকাদার তা সরবরাহ করে থাকেন। কিন্তু গত জুনে পুরোনো অর্থবছর শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন অর্থবছরের বরাদ্দ আসেনি। এ জন্য ঠিকাদারও নিয়োগ হয়নি।
জুলাই মাসের প্রথম দিন থেকে এসব প্রাণীকে সরকারিভাবে কোনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না। স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি ও বনরক্ষীরা বলেন, পার্কে আসা দর্শনার্থী ও তাঁদের উদ্যোগে প্রাণীগুলোকে বর্তমানে কিছু খাবার দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে এসব প্রাণী আগের চেয়ে অনেক শীর্ণ ও নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইউনুস ফরাজী বলেন, জুলাইয়ে ইকোপার্কের বন্য প্রাণীদের খাবারের জন্য সরকার কোনো অর্থ বরাদ্দ দেয়নি। ফলে আড়াই মাস ধরে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না। স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় কিছু খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে, তবে তা অপ্রতুল।
এভাবে চলতে থাকলে আর স্থানীয় ব্যক্তিরা খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দিলে প্রাণীগুলো অনাহারে মারা পড়বে। টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনের সখিনা বিটের কর্মকর্তা সজীব কুমার মজুমদার বলেন, ‘প্রাণিকুলের খাবারের জন্য নতুন অর্থবছরে এখনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ না থাকায় স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় আমরা খাবার সরবরাহ করছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। আশা করি, অল্প দিনের মধ্যে বরাদ্দ পেয়ে যাব।’
পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অজিত কুমার রুদ্র বলেন, ‘জুন মাসে বরাদ্দ শেষ হয়ে গেছে। নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার পর বরাদ্দ পেতে দু-তিন মাস সময় লাগে। বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় খাবার সরবরাহ করতে বলেছি। তবে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।’
কৃপ্র / কে আহমেদ/ এম ইসলাম