কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ভোলা জেলার মনপুরা বারবার ভাঙনের মুখে পড়ে পূর্ব-পুরুষের ভিটে-মাটি হারিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন বেড়িবাঁধ কিংবা খাস জমিতে। জীবন নির্বাহের জন্য কেউ কেউ নদীর কিনারে ক্ষুদ্র ব্যবসা করছেন। তবে সেখানে বেশিদিন ঠাঁই মিলেছে না সর্বস্বহারা এই মানুষগুলোর। মেঘনা যেন পিছু ছাড়ছে না তাদের। বারবার ভাঙনের মুখে পড়ে ৮-১০ বার ঠিকানা বদল করেও স্থিতিশীলতা আসেনি এসব ‘নদীভাঙা’ মানুষের জীবনে। থেমে নেই ঠিকানা বদলে ছুটে চলা।
গত ৫ দিনে মেঘনায় ভয়াবহ ভাঙনে ঠিকানা পাল্টানোর চিত্র দেখা মেলা মনপুরা উপকূলের সর্বত্রই। ভাঙনে প্রতিদিনই পাল্টাচ্ছে দৃশ্যপট। ২১০ একর জমির উপর গড়ে উঠা দৃষ্টিনন্দন একটি খামারবাড়ির প্রায় ৫০ একর জমি মেঘনার পেটে চলে গেছে।
মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চৌধুরী বাজারের পূর্বপাশে প্রায় এক কিলোমিটার পাকা সড়ক ভেঙে গেছে। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে পাকা সড়কে। এই বছরে নির্মাণাধীন পুলটি ভেঙে পড়ে আছে। সবচেয়ে বেশি ভাঙছে উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিরপাড়, পশ্চিম আন্দির পাড়, কাউয়ারটেক পূর্ব ও পশ্চিম পাশ। এই সমস্ত এলাকার শতবর্ষী মসজিদ, মন্দির, স্কুল, হাট-বাজার সবই ভেঙে গেছে। মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে মেঘনা।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মিয়া যুগান্তরকে বলেন, ৮-১০ বার ভাঙ্গনের মুখে পড়েছি। এই রাতে ঘরে থাকতে পারবো কিনা জানি না। ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব। চরের খাস জমিতে আশ্রয় নেয়া ছাড়া উপায় নাই।
ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দা রহিমা বলেন, এক সময় সব ছিল, সবকিছু হারিয়ে নদীতে মাছ ধরে সংসার চলে। এইবার শেষ আশ্রয়টুকু মনে হয় আর থাকবে না। পরিবার পরিজন নিয়ে চরে আশ্রয় নেয়া ছাড়া উপায় নাই।
কৃপ্র/ এম ইসলাম
একই কথা বলেন ফাতেমা, সুলতান ও সাদেকসহ মনপুরা উপকূলের ভাঙন কবলিত এলাকার অনেকেই।
মনপুরা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন যুগান্তরকে বলেন, প্রতিদিনই মেঘনার ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে উপকূলের হাজারো মানুষ। দ্রুত ব্লক ড্যাম্পিং করে ভাঙন রোধ করা না গেলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে ইতিহাস-ঐতিহ্যের মনপুরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম জানান, চরফ্যাশনের ঘোষেরহাট ও মনপুরা রামনেওয়াজ রক্ষায় প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পাওয়ার পর টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভাঙন রোধে কাজ করা হবে।