কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সরকারের দারিদ্র্যবান্ধব খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় রংপুর বিভাগের ৮ লাখ ৮২ হাজারেরও বেশি হতদরিদ্র পরিবার অতিস্বল্প মূল্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছে। সরকারি সূত্রে বলা হয়, ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক কার্ডধারী সুবিধাভোগি হতদরিদ্র পরিবার বছরের কর্মহীন মৌসুমে ৫ মাসের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে এই চাল পাবে। খবর বাসস।
রংপুরের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল্লাহ আল মামুন আজ বাসসকে জানান, সুবিধাভোগী পরিবারগুলো এখন সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের জন্য এবং আগামী বছরে মার্চ ও এপ্রিল মাসের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল পাবে। তিনি জানান, সুবিধাভোগী পরিবার মনোনয়নের ক্ষেত্রে যারা অন্য কোন সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনি কর্মসূচির সুবিধাভোগী নন, এমন নারী প্রধান পরিবার, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত অথবা পরিত্যক্তা নারী এবং ছেলেমেয়েসহ হতদরিদ্র পরিবারকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
এই কর্মসূচির অধিন রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৫৮ উপজেলার ৫৩৪ ইউনিয়নের ৮ লাখ ৮২ হাজার কার্ডধারী সুবিধাভোগি পরিবার ১ হাজার ১৬৯ জন নিয়োগকৃত ডিলারের মাধ্যমে এই চাল পাবে। এদের মধ্যে রংপুর জেলায় ১ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি পরিবার, গাইবান্ধায় ১ লাখ ১৭ হাজার, কুড়িগ্রামে ১ লাখ ৪১ হাজার, লালমনিরহাটে ৫৯ হাজার ৪৬৪, নীলফামারীতে ১ লাখ ৩২ হাজার, দিনাজপুরে ১ লাখ ৩৬ হাজার, পঞ্চগড়ে ৫০ হাজার ৪৬৬ ও ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬৭ হাজার ৭০ পরিবার এই সুবিধা পাবে।
মামুন বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর থেকে রংপুর বিভাগে পুরোদমে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি কার্যক্রম চলছে।
সূত্র জানায়, উপজেলা পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মকর্তার নেতৃত্বে ‘ইউনিয়ন পযার্য়ের ৭ সদস্যের সুবিধাভোগী মনোনয়ন কমিটি’ সুবিধাভোগী পরিবার মনোনিত করছে। এই কমিটির বাকি ৬ সদস্য হলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান, দু’জন ইউপি সদস্য, ইউপি সচিব ও স্থানীয় ২ জন গণ্যমান্য ব্যক্তি। ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি থেকে বাছাই তালিকা প্রস্তুত করে এটি অনুমোদনের জন্য উপজেলা পর্যায়ের ৯ সদস্যের কমিটির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
স্থানীয় সংসদ সদস্যকে প্রধান উপদেষ্টা ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা করে গঠিত উপজেলা পর্যায়ের কমিটি সুবিধাভোগিদের মনোনয়ন তালিকা অনুমোদন করেন। প্রতি ৫শ’ সুবিধাভোগীর জন্য একজন করে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।
উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে চেয়ারম্যান হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সদস্যরা হলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও একজন উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান। কমিটির সদস্য সচিব হচ্ছে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, রংপুর বিভাগে ইতোমধ্যে ৫ লাখ ৮৫ হাজারেরও বেশি সুবিধাভোগীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- রংপুর জেলায় ৯৩ হাজার ৯০১, গাইবান্ধায় ৯০ হাজার ৪৯৮, কুড়িগ্রামে ৮৬ হাজার ১৯৩, লালমনিরহাটে ৫৬ হাজার ৩৮৬, নীলফামারীতে ৪৩ হাজার ৬৯২, দিনাজপুরে ১ লাখ ২৩ হাজার, পঞ্চগড়ে ৪৪ হাজার ৩৮৯ ও ঠাকুরগাঁও জেলায় ৪৭ হাজার ১১২ জন।
কৃপ্র/ এম ইসলাম