কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলায় খাদ্য, ওষুধ, বাচ্চা ও পোল্ট্রি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় পোল্ট্রি ব্যবসায় ধস নেমেছে। এরই মধ্যে উপজেলার অধিকাংশ পোল্ট্রি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি কোনো নীতিমালা না থাকায় ভারতীয় ডিম, বাচ্চা ও ওষুধ এ দেশের বাজার অনেকটা দখল করে রেখেছে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে লোকসানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোল্ট্রি শিল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। খবর ইত্তেফাক অনলাইনের।
আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশের মধ্যে আক্কেলপুর উপজেলা পোল্ট্রি শিল্পে সুপরিচিতি রয়েছে। এই উপজেলার জামালগঞ্জে একটি সরকারি হ্যাচারি ও বেসরকারিভাবে ১০টি মুরগির হ্যাচারি রয়েছে। প্রায় এক হাজার পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। যা থেকে সোনালী জাতের মাংসের মুরগি ও বয়লার মুরগি বছরে প্রায় ৯০ টন উত্পাদন হয় এবং এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হচ্ছে। ৩৩টি ডিম দেওয়া খামার রয়েছে যা থেকে বছরে ৮ কোটি ডিম উত্পাদন হয়।
বর্তমানে ৪৮৪টি রেজিস্ট্রেশনভুক্ত পোল্ট্রি মুরগির খামার রয়েছে। বেসরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক খামার। ব্যবসায়ীরা খামারিদেরকে মুরগির বাচ্চা থেকে শুরু করে খাদ্য, ওষুধসহ সব কিছুই বাকিতে সরবরাহ করে থাকেন। প্রত্যেক খামারির কাছে লাখ লাখ টাকা ব্যবসায়ীদের বাকি রয়েছে। বর্তমানে মুরগির খামারিরা ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক খামারি বলেন, বর্তমানে সোনালী জাতের মুরগি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হলে কোনো রকমে আসল টাকা বেড়িয়ে আসতো। ১ হাজার মুরগির ওপরে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাকিতে মুরগি সামগ্রী ক্রয় করার কারণে একদিকে লোকসান অন্যদিকে জিম্মি হয়ে পড়েছি।
আক্কেলপুর পৌরসভার খামারি শাহীন ইসলাম বলেন, লেয়ার মুরগির বাচ্চা মুরগির খাবারসহ অন্যান্য উপকরণের মূল্য বাড়ায় উপজেলার সম্ভাবনাময় এ শিল্প লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম বলেন, খাদ্য, ওষুধ ও বাচ্চার মূল্য বৃদ্ধির কারণে ক্ষুদ্র খামারিরা লোকসানের মুখে পড়েছে। ফলে বর্তমানে এ উপজেলার অনেকেই খামার বন্ধ করে দিতে চাইলেও প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মচারীরা মাঠ পর্যায়ে তদারকি চালিয়ে ও পরামর্শ দিয়ে খামারিদের এ ব্যবসা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
কৃপ্র/ এম ইসলাম