কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আজ ১৪ অক্টোবর বিশ্ব ডিম দিবস। এটি অপ্রচলিত একটি দিবস যার সম্পর্কে সাধারণ্যে তেমন প্রচার-প্রচারণা দেখা যায় না। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় দিবসটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ডিম সম্পর্কে সাধারন মানুষের মনে যেসব নেতিবাচক ধারণা বাসা বেঁধে আছে তার নিরসনে ডিম দিবসকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো স্বাস্থ্য বিভাগ কিংবা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর কারও পক্ষ থেকে ডিম দিবস পালনে জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে কোন কর্মসূচী রয়েছে এমন খবর আমাদের জানা নেই।
ডিম সম্পর্কে সবচাইতে নেতিবাচক ধারণাটি হলো ডিমে কোলেস্টরেলের মাত্রা বেশি। তাই বয়স্করা যতসম্ভব ডিমকে এড়িয়ে যান। যারা কালেভদ্রে বিপদে পড়ে এক দুইটি ডিম খান তারাও ডিমের কুসুম অর্থাৎ লাল অংশ ফেলে শুধু সাদা অংশ খেয়ে থাকেন। কিন্তু আধুনিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ডিমে যে কোলেস্টরেল রয়েছে তা মানবদেহের জন্য উপকারী। ডিম সব বয়সী মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে । তাছাড়া শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি, মেধার বিকাশ ও নারীর পুষ্টি অর্জনে ডিম অতীব দরকারি খাদ্যদ্রব্য। ডিম বার্ধক্যজনিত অন্ধত্ব নিবারণে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। তাছাড়া ডায়াবেটিস (টাইপ-২) প্রতিরোধে ডিমের ভূমিকা রয়েছে বলে সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। ডিমের এতসব উপকারী গুণ রয়েছে বলে বিশ্ব ডিম দিবসের শ্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সুস্থ যদি থাকতে চান প্রতিদিন ডিম খান’। অর্থাৎ প্রতিটি মানুষকে (চিকিৎসকের পরামর্শে ডিম খাওয়া নিষেধ এমন ব্যক্তি বাদে) দিনে একটি ডিম খাওয়া উচিৎ ।
বয়স্ক লোকদের ছোটবেলার স্মৃতিতে ডিম ছিল মহার্ঘ বস্তু। তখন ডিমের উৎপাদন ছিল কম। গরীব মানুষ মাঝে মধ্যে বিশেষ আয়োজন হিসাবে তরকারিতে ডিমের ব্যবস্থা রাখতেন। অনেকে একটি ডিমকে দুই বা তিন টুকরা করে রান্না করতেন। ডিমের সেই দুর্দিন এখন নেই। সারা দেশে ব্যাপকভাবে ডিমের উৎপাদন বেড়েছে। ভাটি অঞ্চল সুনামগঞ্জের ভৌগোলিক সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে উঠেছে বহু ব্যক্তিগত হাঁসের খামার। এই খামারগুলোর ডিম এখন সারা দেশে চালান হচ্ছে। ডিম উৎপাদনের মাধ্যমে ভাটি সুনামগঞ্জের বহু মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকা- ও আয়-রোজগার নিশ্চিত করা গেছে। সারা দেশে খামারি মোরগের ডিম উৎপাদনের বিপ্লব ঘটে গেছে বলা যায়। ডিমের দামও সকলের সাধ্যসীমার মধ্যেই রয়েছে। বরং মাছ ও মাংসের চাইতে ডিমের মূল্য অনেক সাশ্রয়ী। তাই এখন ধনী-দরিদ্র সকলেই ডিম খেতে পারছেন। এর প্রভাব পড়েছে মানুষের স্বাস্থ্যের উপর। বিশ্ব ডিম দিবসকে সামনে রেখে আমাদের আহ্বান থাকবে, পুষ্টি চাহিদা পূরণে সকলেই ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আরও ডিমের খামার গড়ে তুলুন।