কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা সীমান্ত ঘেষা এবং ধরলা নদী বেষ্টিত। এ উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের মানুষ সাধারণত রবি শস্যের উপর নির্ভরশীল। তা দিয়ে চলে তাদের জীবন জীবিকা। যাদের জমি নাই তারা অন্যের জমি লিজ নিয়ে নানা ধরনের শাক সবজির চাষ করে।
চলতি মৌসুমে লাউ, বেগুন, মুলা মরিচ, পটল, সিম, লালশাকসহ বিভিন্ন সবজির আগাম চাষ করে বদলে দিয়েছে নিজেদের ভাগ্যের চাকা। খুচরা পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখান থেকে নিয়ে বাজারে খুচরা বিক্রি করে। এখানে কৃষক কৃষানী কেউ ঘরে বসে নেই। কেউ পরিচর্যার কাজ করছে কেউ সবজি উঠাচ্ছে আবার কেউ বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে। সবজি চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।
এ বছর কোন জমি পতিত নেই বিস্তৃর্ণ জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে সবুজের সমাহার। উপজেলার বালাহাট নাওডাঙ্গা, গোরকমন্ডপ, চরগোড়কমন্ডপ, বালাটারী, কুরুষাফেরুষাসহ শত শত একর জমিতে ব্যাপক সবজির চাষ হয়েছে। চাষকৃত সবজির মধ্যে লাউ, বেগুন, আলু, লালশাক, মূলা, ধনেপাতা,পটল, কাঁচা মরিচসহ নানা ধরনের সবজি।
কৃষক সিদ্দিক মিয়া সবজি চাষ করে সাফল্য অর্জন করে গ্রামের অন্য কৃষকদেরকে চমক দেখিয়েছেন। নিজের সামান্য জমিসহ পাশাপাশি তিনি অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। জমির মালিককে দিয়ে যাবতীয় খরচ মিটিয়ে বছরে প্রায় দুই-তিন লাখ টাকা আয় করেন। এবার তিনি বিভিন্ন প্রকারের শাক, মুলা, পটল, লাউ শাক বেগুন চাষাবাদ করছেন।
কৃষক সিদ্দিক মিয়া জানান, তিনি এক সময় অভাবের তাড়নায় পড়ালেখা করতে পারেননি। জীবন বাঁচার তাগিতে দিন মজুরের কাজ করতো। এরপর কৃষি অফিস থেকে সামান্য প্রশিক্ষন নিয়ে সম্পৃক্ত হন কৃষি কাজে। আর সবজি চাষ করে বদলে গেছে নিজের ভাগ্য চাকা। পরিবারের আর্থিক অনটন কেটে গেছে। গত বছর শীত মৌসুমে ২ একর জমিতে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় করেছেন। বছরও সবজি বিক্রি করে দ্বিগুন টাকা আয় করবেন বলে অনেকটা আশাবাদি তিনি।
কৃষক রাশেদুল ইসলাম জানান, তিনি এবার সোয়া বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছি। এবার বেগুনের বাম্পার ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় বিঘা প্রতি ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আসবে। তিনি বলেন আমার বেগুন চাষের খরচটা উঠেছে। বেগুনের বর্তমান বাজার মুল্যে যদি এক মাস পর্যন্ত থাকে তাহলে প্রতি বিঘা বেগুনে ১ লক্ষ টাকা বিক্রি করা সম্ভব হবে। গত বারের চেয়ে এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মুসাব্বের আলী জানান, আমাদের ইউনিয়নটি হলো সবজি উৎপাদনের ভান্ডার। এখানে অনেক কৃষক বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করে নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুর রশিদ জানান, এ বছর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে চলমান রবিশস্যের চাষাবাদ আছে। সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষন দেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় যতেষ্ট সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
সুত্রঃ. somoyerkonthosor.com/ কৃপ্র/ এম ইসলাম